শেখ ফজলুল করিম সেলিম হলেন ফরিদপুর-১০ আসন থেকে নির্বাচিত হওয়া সংসদ সদস্য। তিনি একজন প্রবীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। মূলত তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের একজন বিজ্ঞ নেতা। সম্প্রতি জানা গেছে তিনি সংসদে প্রশ্ন তুলেছেন ড. ইউনুসের ডাক্তারের পদবি নিয়ে। তিনি বলেছেন ড. ইউনুস কিসের ডাক্তার।
ড. মুহম্মদ ইউনূস কীসের ডাক্তার বলে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ দলীয় সিনিয়র সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে একজন ডক্টর আছেন। ড. ইউনূস। উনি পশুর ডাক্তার? না মাছের ডাক্তার, না গরুর ডাক্তার? না বাংলাদেশের মানুষের সর্বনাশার ডাক্তার। উনি নাকি শান্তির জন্য নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন, যত অশান্তি উনি বাংলাদেশে ঘটানোর জন্য। উনি দেশের পাই পয়সার উন্নতিও করেননি। উনি ক্ষতি করে গেছেন। সুদ খাইয়েছেন। একজন সুদখোর।’
রোববার (১৯ জুন) সংসদে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় স্পিকার ড.
ভ্যাকসিন ক্রয়ে বিএনপির দুর্নীতির অভিযোগের জবাবে শেখ সেলিম বলেন, “বিএনপি সব কিছুতেই দুর্নীতি চায়। তাদের মাথায় দুর্নীতি। তাদের রক্তে দুর্নীতি। তাই তারা সবকিছুতেই দুর্নীতি দেখে। আর কিছুই তাদের চোখে পড়ে না।’
তিনি বলেন, “২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর (প্রধানমন্ত্রী) পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য বিভিন্ন দাতা দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জাপান, এডিবিসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা রাজি নয়। কিন্তু মাঝখানে একজন চিকিৎসক আসেন। বিশ্বব্যাংক এসে বলল, দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতি কী? একটি পয়সাও দেননি। একটি পয়সা দেননি বলেই দুর্নীতি হয়েছে। কী আজব। এরা জনগণের শত্রু।’
সেলিম বরেন, ‘ড. ইউনূস সাহেব এবং বাংলাদেশের কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবী। তাদের সবসময়ই নেতিবাচক মনোভাব থাকে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাক, তারা কখনো ভাবে না। ‘
অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে শেখ সেলিম বলেন, “তিনি (ড. ইউনূস) ক্লিনটন ফাউন্ডেশনকে যে পাঁচ বিলিয়ন ডলার দিয়েছেন তার উৎস খতিয়ে দেখুন। এটা মানি লন্ডারিং। তিনি (ড. ইউনূস) বিশ্বব্যাংকের কাছে বিক্রি করেছেন। বিএনপিও। বিদেশিদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পদ্মা সেতু বন্ধ করার চেষ্টা করেছে।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “বিএনপি বলছে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে। শ্রীলঙ্কা হলে কি তারা খুশি হবে? বাংলাদেশ ধ্বংস হলে তারা খুশি। বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাবে? বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত অনেক মজবুত। বাংলাদেশ হবে। কখনো শ্রীলঙ্কা হবে না।প্রধানমন্ত্রী যেভাবে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন তাতে বাংলাদেশ হবে সিঙ্গাপুর।মালয়েশিয়া ও সুইজারল্যান্ড।
কথায় কথায় বিএনপি সরকারকে টেনে নামবে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, “ওরা ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগকে টেনে নিয়ে আসছে। আপনারা যত টানবেন, আমাদের ক্ষমতা তত বাড়বে। আজ আমি 2022 সালে এসেছি। যদি আমরা আবার টেনে আসি, আমরা ২০৫০ সালে চলে যাবো। আপনারা থাকুন।’
তিনি বলেন, “বিএনপি বিদেশিদের নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। দেশের ভাবমূর্তিও নষ্ট করে। আর বিদেশিদের কাছে ধর্না দেয়। বিদেশিরা বাংলাদেশে কিছু করতে পারে না। বাংলাদেশের ভাগ্য এদেশের মানুষই নিয়ন্ত্রণ করবে। বিদেশিরা করবে। সংবিধান অনুযায়ী বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন হবে।
প্রসঙ্গত, ড. ইউনুস সর্বপ্রথম প্রবর্তন করেছিলেন ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা। তিনি একজন নোবেল পুরুষ্কার প্রাপ্ত বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক। ড. ইউনুস একজন অর্থনীতিবীদ ও ব্যাংকার এবং তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা।