আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানোর জন্য দলগুলোর সাথে সংলাপে বসছে নির্বাচন কমিশন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। তবে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোট গ্রহনে কারচুপির সম্ভাবনার কতাহ বলেছেন। এবার এ বিষয় নিয় কথা বলেছেন সিইসি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে বাইরে অনেক কথা চাউর হচ্ছে। এটি হ্যাকিং হতে পারে, এটিতে ভোট কারচুপি হতে পারে, তবে আমরা এখনও পর্যন্ত এর কোন স্পষ্ট প্রমাণ পাইনি।
আজ (বুধবার) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে সংলাপের নবম দিনে জাকের পার্টির সঙ্গে সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ইভিএম নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ইভিএম হ্যাকিং কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কারণ এর সাথে ইন্টারনেট সংযোগ নেই। এটা নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। আমরা ক্রমাগত পরীক্ষা করছি, কিন্তু সেখানে অনেক কথা হচ্ছে যে হ্যাকিং ঘটতে পারে, এটিতে ভোট কারচুপি করা হতে পারে। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ পাইনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। সেই ইচ্ছা পূরণের জন্য সবাইকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
গণতন্ত্রকে অস্বীকার করার উপায় নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীন দেশের যাত্রা শুরু হয়েছে। সেই জন্য আমাদের সহযোগিতা করবেন। সক্রিয় সহযোগিতা চাই।
সিইসি বলেন, অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সুষ্ঠু পরিবেশে অবাধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এটা মাঝে মাঝে বিতর্কিত হয়। আমরা যদি পরিবেশকে অনুকূল করতে পারি, তাহলে ভোটাররা নিরাপদে ও আত্মবিশ্বাসের সাথে ভোট দিতে পারবে।
সিইসি আরও বলেন, আইন ও বিধির আলোকে কমিশন পরিচালিত হবে। আমরা এর বাইরে যেতে পারি না। আমাদের সকলের আন্তরিক সহযোগিতা, প্রয়াস থাকলে আমার সংসদ নির্বাচনের কঠিন কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারব।
জাকের পার্টির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শামীম হায়দারের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংলাপে অংশ নেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পদ্ধতি ঠিক করতে নির্বাচনের দেড় বছর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে ইসি। এ জন্য ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অনড় বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি সমমনা দল ইসির সংলাপ বয়কট করেছে।
নবম দিনে ৩২টি দলের সঙ্গে সংলাপ হওয়ার কথা থাকলেও সর্বশেষ বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টি (বিজেপি) ‘না’ বলে দেওয়ায় বুধবার পর্যন্ত সংলাপে অংশ নেওয়া দলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩টিতে। ৮টি রাজনৈতিক দল সংলাপ বয়কট করেছে। এছাড়া আরেকটি দল সময় বাড়ানোর আবেদন করছে।
উল্লেখ্য, অনেকগুলো রাজনৈতিক দল ইভিএমের নিয়ে নেতিবাচক কথা বললেও প্রযুক্তিবিদেরা বলেছেন ভিন্ন কথা। প্রযুক্তিবিদেরা বলছেন ইভিএম এমন একটি মেশিন যেটা বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তবে এ ধরনের সরকার দাবি নাকচ করে দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ইভিএম এর বিপক্ষে কথা বলেছেন। অনেক দল ব্যালটে ভোট বিশ্বাসী বলে জানিয়েছে।