সম্প্রতি নিজের সর্বস্ব ও ঋনের মাধ্যমে ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করে তা ফেরত না পাওয়ার হতাশায় নিজের শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহনন করেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গাজী আনিসুর রহমান। সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা পাওনা টাকার বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সন্মেলন করেন। এ বিষয়টি নিয়ে তিনি মামলাও করেন কিন্তু কোন ফলাফল না পেয়ে শেষ পর্যন্ত আত্মহনন জন্য নিজের শরীরে আগুন দেন ঢাকা প্রেসক্লাবের সামনে। সাবেক ছাত্রলীগ নেতার শরীরে আগুন দিয়া নিয়ে যা বলল র্যাব।
প্রসাধনী সামগ্রী প্রস্তুতকারী কোম্পানি হেনোলাক্সের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফাতেমা আমিনের কাছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ব্যবসায়ী গাজী আনিসুর রহমান ৩ কোটি টাকা পেতেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ার বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাহিনীর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এ সময় মইন গাজী আনিসের সঙ্গে আমিন-ফাতেমা দম্পতির ব্যবসায়িক লেনদেন ও বিনিয়োগের কথা তুলে ধরেন।
কমান্ডার মঈন বলেন, গাজী আনিসের সঙ্গে লেনদেনে টাকার পরিমাণ নিয়ে আসামিদের আপত্তি আছে। লেনদেন হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন তারা। বিভিন্ন সময়ে চেকে ও নগদে ৭৬ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। তবে লভ্যাংশসহ গাজী আনিসের ন্যায্য পাওনা তিন কোটি টাকা। এ নিয়ে একাধিকবার তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে।
মঈন জানান, গত ৪ জুলাই বিকেল পৌনে ৫টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকায় নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আত্ম/হত্যার চেষ্টা করেন আনিসুর রহমান। তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে মঙ্গলবার ভোর সোয়া ৬টায় তার মৃ/ত্যু হয়।
আত্ম/হত্যার আগে, আনিস ফেসবুকে একটি পোস্টে দাবি করেছিলেন যে তিনি হেনোল্যাক্স গ্রুপে এক কোটি ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন। আনিসের বড় ভাই নজরুল বাদী হয়ে নুরুল আমিন ও ফাতেমা আমিনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় আত্ম/হত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উত্তরা থেকে নুরুল আমিন ও ফাতেমা আমিনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা দিলেও লাভ, আসল মিল প্রায় ৩ কোটি টাকা। যার মধ্যে নুরুল আমিন ফেরত দিয়েছেন ৭৬ লাখ টাকা। গ্রেপ্তার দম্পতিও চেক দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
প্রসঙ্গত, সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা ওই ব্যবসায়ীর নিকট থেকে টাকা ফেরত না পেয়ে একপর্যায় এমন সিদ্ধান্ত নেন। সর্বস্ব হারিয়ে ঋনের দায়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেন তিনি।