বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক পর্যায়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ বেশ লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। তবে হঠাৎ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশের বিষয়ে অতি আগ্রহের বিষয়টিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা ভিন্নভাবে দেখছেন। তবে ঠিক কি কারণে বাংলাদেশের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ, সে বিষয়ে তেমন কোনো কারণ জানায়নি বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস। তবে ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে (আইপিএস) বাংলাদেশের সক্রিয় তা দেখতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে বাংলাদেশের প্রধান দাবি হল, র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা, তবে এখনই পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা যদি প্রত্যাহার না করা হয়। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার আশ্বাসও চায় বাংলাদেশ। র্যাবের উজ্জ্বল ভূমিকার বিস্তারিত তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে আবারও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা। একই সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ওই বাহিনীর সদস্যরা যে বিচার ও শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন, তাতে বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে সব ঘটনার সঙ্গে র্যাব জড়িত নয়। তবে ‘কি”ল্ড ইন অ্যাকশন’-এ কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে, যা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হয়।
সেগুনবাগিচা নিশ্চিত করেছে যে, সম্প্রতি ঢাকা সফরে আসা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা (হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সিনিয়র ডিরেক্টর) রিয়ার অ্যাডমিরাল আইলিন লাউবাচারের সঙ্গে এসব বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। জানা গেছে- প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের মধ্যে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। ওই আলোচনায় উল্লিখিত বিষয়গুলো ছাড়াও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা শরনার্থীদের সংকটের একটি টেকসই সমাধানে পৌঁছাতে মিয়ানমারের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ।
মার্কিন প্রশাসনের প্রভাবশালী কর্মকর্তা মিজ লাউবাচার চার দিনের সফর শেষে মঙ্গলবার ঢাকা ত্যাগ করেছেন। ওই সফরের সঙ্গে যুক্ত বাংলাদেশ সরকারের একজন প্রতিনিধি রাতে দেশের একটি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশসহ সমমনা দেশগুলো ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকুক। বাইডেন প্রশাসনের প্রতিনিধিরা ঢাকাকে বার্তা দিয়েছেন যে, আইপিএসে এশীয় অঞ্চলের ছোট-বড় সব দেশের মর্যাদা ও গুরুত্ব সমান হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাউকে বৈষম্য বা উপেক্ষা করবে না। জবাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরে যোগদানের প্রশ্নে ইতিবাচক অবস্থান ব্যক্ত করেন। উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত আইপিএসে বাংলাদেশের অবস্থান অর্থনৈতিক ফ্রন্টে যোগদান, কোনো সা”/মরিক কর্মকাণ্ডে জড়িত না হওয়া।
মিজ লাউবাচারের সঙ্গে আলাপচারিতায় ঢাকার প্রতিনিধিরা খোলাখুলি নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা করেন। সেগুনবাগিচার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ সফরে আসছেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লু। বাইডেনের নিরাপত্তা দূত মিজ লাউবাচার বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বিষয়সহ আরো বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করে অসম্পূর্ণ রেখে গেছেন। ডোনাল্ড লু এসে পরবর্তী ধাপের আলোচনা আরম্ভ করবেন, এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।