বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে একটি ভিন্ন ধরনের খবর উঠে আসতে দেখা যায়, আর সেটি হলো বিভিন্ন ধরনের স্থাপনায় লোহার রডের বদলে বাশ বা কাঠ জাতীয় দ্রব্যের ব্যবহার। অনেক সময় অর্থ আত্মসাতের জন্য এই ধরণের কর্মকান্ড ঘটিয়ে থাকেন অসাধু কর্মকর্তা বা ঠিকাদারেরা। এবার তেমনি একটি ঘটনা ঘটলো, রেলওয়ে সেতুর স্লিপারে লোহার নাট বোল্ট না দিয়ে বাঁশের কঞ্চি দেওয়া হয়েছে। এটা কিছুটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঘটনাটি সত্য।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের লাঙ্গলকোট উপজেলার লাঙ্গলকোট উপজেলার বান্নঘর এলাকায় ২১৫নং রেল সেতুর অর্ধেক কাঠের স্লিপার ক্ষ”তিগ্রস্ত হয়েছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত স্লিপারের লোহার ক্লিপের নাট-বল্টু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে।
মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, লাকসাম-চট্টগ্রাম রেল সেতুর অর্ধেক কাঠের স্লিপার নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্লিপার মেরামতে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়াও অনেক স্লিপারে ক্লিপ লাগানো নাট বল্টু ছাড়াই রেলপথে চলছে রেল। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে সেতুগুলো।
নাঙ্গলকোট রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার উত্তরে বান্নাঘর মাজার সংলগ্ন বান্নাঘর এলাকায় একটি খালের উপর নির্মিত ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের উপর ২১৫নং রেল সেতু রয়েছে। ব্রিটিশ সরকারের নির্মিত সেতু ছাড়াও বর্তমান সরকারের আমলে ডাবল লাইন নির্মাণের সময় চট্টগ্রামের দিকে আরেকটি নতুন সেতু নির্মাণ করা হয়।
২১৫নং রেল সেতুর মধ্যে ৪২টি কাটের ওপর স্লিপার রয়েছে। যদিও সেই স্লিপারের সাথে লোহার ক্লিপ লাগানো ছিল, তবে বেশিরভাগ পুরানো সেতুতে লোহার ক্লিপের পরিবর্তে বাঁশের কঞ্চি বসানো হয়েছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফে”সবুকে ভাইরাল হলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের লোকজন তড়িঘড়ি করে মঙ্গলবার সকালে বাঁশের ডাল তুলে লোহার ক্লিপ লাগিয়ে দিলেও এখনো অবস্থা নড়বড়ে রয়ে গেছে। কোথাও বাঁশের কঞ্চি দেখা গেছে। ক্লিপগুলো আবার কোথাও উঠে যাচ্ছে। সেতুর চারপাশে লাইনে অনেক ক্লিপ নেই।
প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী এই সেতু দিয়ে চট্টগ্রাম, লাঙ্গলকোট, লাকসাম কুমিল্লা-ঢাকা রুটে ট্রেনে যাতায়াত করে এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ভারী মালবাহী ট্রেন এই সেতু দিয়ে ঢাকায় আসে।
বান্নাঘর এলাকার বাসিন্দা মোস্তফা কামাল ও জাকির হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা সেতুর ওপর বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার করছেন। মঙ্গলবার সকালে এসব পরিবর্তন করেন রেলওয়ের লোকজন।
লাকসাম রেলওয়ে আইডিওলজির কর্মকর্তা আতিকুল রহমান দেশের একটি গনমাধ্যমকে বলেন, তিনি অনেক সাংবাদিকের মাধ্যমে সেতুর এই অবস্থার কথা শুনেছেন। বিষয়টি পিডব্লিউআইকে জানানো হয়েছে।
নাঙ্গলকোট রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জামাল উদ্দিন বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। এগুলো দেখার সুযোগ আমাদের নেই। এগুলো দেখার দায়িত্ব ফেনী পিডব্লিউআই এর।
রিপন চাকমা যিনি ফেনী জোনের পিডব্লিউআই কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি বলেন, আমি এই ঘটনার বিষয়টি শুনেছি এবং সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। আর এ বিষয়টি ঠিক করার জন্য সেখানে লোকজন পাঠিয়ে দিয়েছি, তারা দেখে সঠিক ব্যবস্থা নেবেন।