সরকার উন্নয়নের নামে দেশে দুর্নীতি, লু/টপাট চালাচ্ছে। যার ফলে দেশে আজ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সংকটের মুখে পড়েছে। সরকার দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নয়নের কথা ঘটা করে বললেও আজ বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় বেহাল অবস্থার মুখে পড়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করে সরকারী দলের নেতার পকেট ভরেছে মন্তব্য করেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর। এবার রেলের কালো বিড়াল গেলেও দুর্নীতির শেষ হয়নি বলে এ প্রসঙ্গে যা বললেন করেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।
গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রতিবাদ করছে দীর্ঘদিন ধরে। সে কারণে সবার কাছে রেলের কালো বিড়াল নিয়ে সবাই সরব। রেলের কালো বিড়াল চলে গেছে। কিন্তু দুর্নীতি শেষ হয়ে যায়নি। একজনের পর আরেকজন আসছে।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে লু/টপাট, রেলওয়ের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ঢাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ দেশের বিভিন্ন রেলস্টেশনে দাঁড়াচ্ছে। এই সরকার উন্নয়ন নিয়ে আমাদের যে মিথ্যাচার করছে তা এখন সবার সামনে দৃশ্যমান।
নূর বলেন, সরকার দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে তারা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ রপ্তানি করবে। দেশে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। তাহলে আমাদের বিদ্যুতের ঘাটতি থাকার কথা নয়, তারপরেও হচ্ছে। কারণ এটা একটা ভাওতাবাজির হিসাব।
উন্নয়নের নামে সরকার নেতাকর্মীদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারার পথ খুলে দিয়েছে উল্লেখ করে নূর বলেন, গত ২০-২১ বছরে পিডিবির হিসাব অনুযায়ী তাদের মুনাফা ছিল ১৩ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা।
কিন্তু তাদের ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে ১১ হাজার কোটি টাকা। ক্যাপাসিটি চার্জের কারণে এই লাভ ক্ষতি হচ্ছে। এই গোঁজামিল উন্নয়নের হিসাব এখন জনগণের সামনে উন্মোচিত হয়েছে। শুধু রাজনীতিবিদই নয়, সিপিডির মতো সংগঠনও বলছে দেশের অর্থনীতি এখন খাদের কিনারায়। সরকার জনগণের হাতে উন্নয়নের মুলা ঝুলিয়ে দিয়েছে।
নুর বলেন, বিদ্যুৎ খাতে কুইক রেন্টালের নামে যে কুইক দুর্নীতি হচ্ছে সেটার কারণে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকার ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া হচ্ছে। এই চার্জ পাচ্ছে সরকারি দলের মাফিয়ারা, যারা আগামী নির্বাচনে তাদের কালো টাকার প্রভাব দেখিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে।
তিনি বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, এই সরকার পৈশাচিক পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছে। বিরোধী দলের কয়েকজন নেতাকর্মীর তালিকা করা হয়েছে। তাদের গু/ম করা হবে, তাদের হ/ত্যা করা হবে। এরপর আবারও তারা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করে ২০১৪ সালের মতো ভোট না দিয়ে নির্বাচন করার স্বপ্ন দেখছে।
নুরুল হক নূর বলেন, বিরোধী দলগুলো যদি নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে রাজপথে নামে ক্ষমতায় থাকার সেই খোয়াব দুঃস্বপ্নে পরিণত করবে। কারণ আজ তরুণ সমাজের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রয়োজন হয় নেই। যে যার জায়গা থেকে সবাই প্রতিবাদে নেমেছে। এখন আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে বিনা ভোটের এই সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত করে পাড়া মহল্লায় গণজাগরণ গড়ে তোলা।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে নূর বলেন, আপনি গণভবন থেকে বেরিয়ে আসুন, মানুষের দুর্ভোগ দেখুন। আপনার সামনে একটি কাঁচের প্রাচীর তৈরি করা হয়েছে, আপনি জনসাধারণের থেকে বিচ্ছিন্ন, আপনি এখন একটি ভার্চুয়াল মাধ্যমে আছেন। আপনি সরাসরি কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না । তিনি প্রশ্ন করেন, আপনার নিরাপত্তার জন্য হু/মকি কে সৃষ্টি করেছে?যারা আপনাকে বন্দিদশায় রেখেছে তাদের কথায় আর কর্ণপাত করবেন না।
তিনি আরও বলেন, মূল্যবোধের চরম অবমাননা করা হচ্ছে। শিক্ষকের গলায় ঝুলানো হচ্ছে জুতার মালা। সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে। কিন্তু সুষ্ঠু বিচার হচ্ছে না। সরকার এ দেশকে উ/গ্রবাদের দেশ হিসেবে চিহ্নিত করছে। সমাবেশে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, সরকার উন্নয়নের নামে দেশের অর্থ লু/টপাট করে খাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সাবেক ডাকসু ভিপি নুর। তিনি বিনা ভোটের সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আহ্বান জানান।