ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে ইডেন কলেজে। বিষয়টি নিয়ে এর আগেও আলোচনায় এসেছে কিন্তু কোনো ধরনের বিচার না হওয়ায় এমন ঘটনার পূনরায় ঘটছে বলে বিভিন্ন মহলের দাবি। এর আগেও ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে নি/র্যাতনের অভিযোগ উঠতলে তিনি মাফ চেয়েছেন। তবে তিনি তার নি/র্যাতনকান্ড বন্ধ করেননি। গতকাল রাতে সভাপতি আবার এক ছাত্রলীগ নেত্রীকে মা/রধর করলে নতুন ভাবে আলোচনার সৃষ্টি হয়। রিভা-রাজিয়ার নি/র্যাতন-চাঁদাবাজি বন্ধে ইডেন অধ্যক্ষকে লিখিত অভিযোগ।
ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে নি/র্যাতন, চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছেন সংগঠনটির একাংশের নেতাকর্মীরা। এসব অভিযোগ তদন্ত করে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে ১১ দফা দাবিও জানিয়েছেন তারা।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৩টায় ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সুপ্রিয় ভট্টাচার্যের কাছে লিখিতভাবে এসব দাবি জানান সংগঠনের একাংশের নেতাকর্মীরা।
এতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির ১৬ জন সহ-সভাপতি, তিনজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও একজন সাংগঠনিক সম্পাদকসহ প্রায় ১০০ জন সাধারণ শিক্ষার্থী সই করেন।
১১ দফা দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগের একাংশ, দাবিগুলো হলো-
১. সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসীর ওপর অতর্কিত হামলার বিচার করতে হবে।
২. বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের অকথ্য গালিগালাজের সুষ্ঠু বিচার করতে হবে।
৩. সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক অশ্লীল প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনা তদন্ত করতে হবে।
৪. গণহারে প্রায় শতাধিক কক্ষ দখলের সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে।
৫. অধ্যক্ষকে কটাক্ষ করে কথা বলার জবাব দিতে হবে।
৬. ছাত্রী হলের ক্যান্টিনে একচেটিয়া চাঁদাবাজি ও একচেটিয়া রাজনীতি বন্ধ করতে হবে এবং এ বিষয়ে প্রশাসনকেও নিরপেক্ষ হতে হবে।
৭. ক্যাম্পাসের কোনো সিসিটিভি ফুটেজ লুকানো যাবে না। সম্পূর্ণ ভিডিও ফুটেজ তদন্ত কমিটিকে দিতে হবে।
৮. আবাসিক হলে অবৈধভাবে যে ওয়াইফাই সংযোগ প্রবেশ করানো হয়েছে, তা অবশ্যই প্রশাসনের মাধ্যমে বের করে দিতে হবে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যে অর্থ নিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ ফেরত দিতে হবে। সেটা ইডেন কলেজের ৪২ জন নেত্রীর সামনে এবং প্রশাসনও উপস্থিতিতেই দিতে হবে।
৯. ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসীর যে অশ্লীল ছবি তোলা হয়েছে, তা প্রশাসনের সামনে মুছতে হবে।
১০. বঙ্গমাতা হলের ১১ তলায় যেসব রুম দখলে আছে, তা উদ্ধার করতে হবে।
১১. সহ-সভাপতি মিম ইসলাম (সভাপতির অনুসারী বলে অভিযোগ রয়েছে) এবং সহ-সভাপতি রোকসানা মেয়েদের যে অত্যাচার করেছেন, তা তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
জানতে চাইলে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোনালী আক্তার বলেন, ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, নি/র্যাতন বন্ধের জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি। ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা না আসা পর্যন্ত আমরা অবস্থান নিয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সুপ্রিয় ভট্টাচার্য ও উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ফেরদৌসী বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এর আগে গণমাধ্যমে কথা বলায় নিজ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল রাত থেকেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে ইডেন কলেজে।
প্রসঙ্গত, ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠে এসেছে তবে তাদের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে। তবে ছাত্রলীগ ইডেন কলেজ এক অংশের দাবি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ।