আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন দলের নেতারা নির্বাচন সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য করার জন্য নির্বাচন কমিশনারের নিকট বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব উপস্থাপন করছে সংলাপের মাধ্যমে। তবে সংলাপ বিএনপি অংশগ্রহণ করছে না এই সংলাপে। এ দিকে দলগুলো কিছু বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলগুলোর কাছে।
দলগুলোর উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আজ এত বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমাকে ভাবতে হচ্ছে কেন? কেন রাতের ঘুম নষ্ট করতে হচ্ছে?
রোববার নির্বাচন ভবনে জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে সংলাপে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন। বৈঠকে জাপা মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
দলের পক্ষ থেকে সাত দিনের মধ্যে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি তোলেন চুন্নু। তাছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার না করা এবং প্রাপ্ত ভোটের শতাংশের ভিত্তিতে (আনুপাতিক নির্বাচন) সংসদে আসন বণ্টনের প্রস্তাবও উত্থাপিত হয়।
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “অন্যান্য দলের কাছ থেকে একাধিক দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পেয়েছি। যেহেতু এখানে প্রায় ১২ কোটি ভোটার বা ৪০ হাজার ভোট কেন্দ্র থাকবে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শক্তি আনুপাতিকভাবে কম। এদিকে থেকে যেটা আপনারা বলছেন, এক্ষেত্রে ফলাফল প্রকাশ পেয়ে গেলে পরবর্তী দিনের জন্য সমস্যা হবে না?’
সিইসির এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে একদিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশের প্রস্তাব দেন চুন্নু। তিনি বলেন, ‘সাত দিনে নির্বাচন। তখন সেনাবাহিনীর কাছে ভোট জমা হবে এবং সব কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে, এসব করা যাবে। একাধিক দিনের ক্ষেত্রে ভোট গণনা করা হবে এক দিনে।’
এরপর কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, কাউকে না কাউকে নেতৃত্বে সহজ ভূমিকা দিয়ে ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। বর্তমান ব্যবস্থায় আমি যতই দক্ষতা দেখাই না কেন, সবার কাছে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিয়ে আসা খুবই কঠিন।
তিনি বলেন, ‘আমাকে আজকে এতো বড় চ্যালেঞ্জ, এতো চিন্তা করতে হচ্ছে কেন? যদি একটি সিস্টেম চালু করা যায়, প্রোপরশনাল রিপ্রেজেন্টেটিভ যে সিস্টেমটা, আমি এখনও জানি না, এটি কি আমাদের দেশের জন্য উপযুক্ত নয়? নাকি এটা আমাদের রাজনৈতিক অনুভূতির সাথে খাপ খায় না?’
তিনি বলেন, এ জন্য গবেষণা করতে পারেন। ওয়ার্কশপ করতে পারেন। আমি মনে করি আপনি একটি সুন্দর সিস্টেম চাইছেন। অর্থাৎ ভোটে কারচুপি করতে চান না। আমি একজন গরীব মানুষ। সেমিনার করার টাকা আমার (ইসি) নেই। কিন্তু আমি জানি আপনাদের আছে। আপনারা পলিটিক্যাল সায়েন্সের প্রফেসরদের বলেন, রাজনৈতিক সহকর্মীদের বলুন যে, আপনারা আসেন, শুনেন আমাদের। তাহলে কী হবে, ঐক্যমত্য তৈরি হবে, সহমত গড়ে উঠবে। তাহলে আপনাদের সাথে আমাদের এত বসতে হবে না।
উল্লেখ্য, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠক করছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ দলগুলোর দাবি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এজন্য তারা বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব রেখেছেন নির্বাচন কমিশনের নিকট। তবে এখন কমিশন গ্রহণযোগ্য এবং অপেক্ষাকৃত কম খরচ সম্পন্ন পদ্ধতিটি ব্যবহার করবেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।