ভুল বোঝাবুঝিসহ নানা কারনে বর্তমানে অনেক পরিবারেই ফাটলের সৃষ্টি হচ্ছে। এই ভুল বোঝবুঝির জেরে অনেক স্বামী-স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদের মত বড় ধরনের সিদ্ধান্তও গ্রহন করছেন। ভেঙ্গে যাচ্ছে অনেকের দীর্ঘদিনের সুখের সংসারও। এই পারিবারিক ভাঙ্গনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতগ্রস্থ হয়ে থাকে এই পরিবারের শিশুরা।
সুনামগঞ্জে ভুল বোঝাবুঝির জেরে আদালতের বারান্দায় ঘোরাঘুরি করতে করতে ক্লান্ত ২৫ দম্পতিকে সুযোগ দিয়েছে আদালত। বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এমন নির্দেশ দেন। এর আগে কয়েক দফায় ১৪৫টি মামলায় ২০০ শিশুকে তাদের অভিভাবকদের কাছে ফেরত দেওয়া হয় এবং ২২৫টি মামলা সমঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয় এবং এই আদালতে দাম্পত্য শান্তি ফিরে আসে। অপর রায়ে আদালত ২৫টি মামলায় ২৫ দম্পতির দুর্বিষহ জীবনের অবসান ঘটিয়েছে। যৌতুক দাবিসহ নানা কারণে পরিবার থেকে বহিষ্কৃত ২৫ নারী তাদের স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। বিচারক স্বামী-স্ত্রীর বক্তব্য শুনে সন্তানসহ নিজেদের কল্যাণে পারিবারিক পুনর্মিলনের ব্যবস্থা করেন।
শাল্লা উপজেলার শর্মা গ্রামের আমির হোসেন (৩০) ও জলপা বেগমের (২৫) মধ্যে কয়েক বছর ধরে যৌতুকের মামলা চলছিল। জলপা বেগম বলেন, আদালতের উদ্যোগে আমি খুশি, আমার একমাত্র সন্তান দীর্ঘদিন বাবা ছাড়া ছিল। এখন আমরা একসাথে থাকতে পারি। আমির হোসেনও খুশি। দু’জনই সাংবাদিকদের কাছে দোয়া চেয়েছেন। দুই রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জ শিশু ও মানবপাচার আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট হাসান মাহবুব সাদী ও পিপি অ্যাডভোকেট নান্টু রায় বলেন, শিশুরা তাদের ঠিকানা ফিরে পেয়েছে, অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার অবসান হয়েছে এবং শিশুটিকে সঙ্গে রেখে তারা সংশোধনের সুযোগ পেয়েছেন। তাদের স্বামী-স্ত্রী বিচ্ছেদের যন্ত্রণা থেকে এবং তাদের সন্তানরা পিতামাতার বিচ্ছেদের অশান্তি থেকে মুক্তি পায়।
উল্লেখ্য, বর্তামানে বৈবাবাহিক সামাজিক ব্যাবস্থা কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেকটাই নড়বরে হয়ে পরেছে। এই নড়বরের কারনে যেসকল পরিবাবারে পারিবারিক কলোহের জন্ম নিয়েছে সেসকল পরিবারে বিচ্ছেদের ঘটনাও শোনা যাচ্ছে অহরহ। এমনকি পারিবারিক কলহের জের ধরে অনেক দম্পতির বহুদিনের সাজানো সংসারের ইতিও টানছেন। এর প্রভাব গিয়ে পরছে ঐ বিচ্ছেদ হওয়া পরিবারের শিশুদের উপরে।