প্রেসিডেন্ট জো বিডেনের প্রশাসন বিশ্বব্যাপী কর্মীদের সাথে পদ্ধতিগতভাবে জড়িত থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বৃহস্পতিবার, বিডেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং অন্যান্য কূটনীতিকদের “শ্রমিক কূটনীতিতে সরাসরি জড়িত হতে এবং শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় কর্মসূচি বাড়াতে” নির্দেশ দিয়েছেন।
ইতিমধ্যে, রাষ্ট্রপতি বিডেন কর্মীদের ক্ষমতায়ন, শ্রম অধিকার এবং শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি স্মারক (প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোরেন্ডাম) স্বাক্ষর করেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন গতকাল রাষ্ট্রপতির স্মারকলিপিতে স্বাক্ষরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকোতে একটি স্থানীয় হোটেলে ইউনিয়ন সদস্যদের কাছে রাষ্ট্রপতি বিডেনের শ্রম অধিকার কৌশল উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, যারা শ্রমিকদের অধিকারের বিরুদ্ধে যাবে, শ্রমিকদের হুমকি-ধমকি দেবে, প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র দেশে শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন, তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শ্রম পরিবেশের উন্নয়নে কাজ করবে। এটি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা এবং পররাষ্ট্র নীতি নিশ্চিত করার অন্যতম চাবিকাঠি।
অনুষ্ঠানে ব্লিঙ্কেন বলেন, “শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা শুধুমাত্র একটি অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। আমরা এটি আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে নিশ্চিত করতে চাই। অতএব, এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা এবং পররাষ্ট্র নীতির অন্যতম চাবিকাঠি।
বিশ্বব্যাপী শ্রমিকের অধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র পাঁচটি কৌশলে সক্রিয়ভাবে কাজ করবে বলেও জানান ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেন, প্রথমটি হচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকার, শ্রমিক, শ্রমিক সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, সুশীল সমাজ ও বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করে আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় কাজ করা হবে। এ জন্য সব দেশের মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাস শ্রমিক, শ্রমিক ইউনিয়নের কণ্ঠস্বরকে তুলে ধরতে কাজ করবে।
দ্বিতীয়ত, সারা বিশ্বে যারা শ্রমিকদের হুমকি দেয়, শ্রমিকদের ভয় দেখায়, ইউনিয়ন নেতাদের আক্রমণ করে বা যারা শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে তাদের জবাবদিহি করা হবে। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।
সে সময় ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের নেত্রী কল্পনা আক্তারের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কল্পনা বলেছিলেন যে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস তার পক্ষে দাঁড়িয়েছে। পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন। আর এ জন্য তিনি (কল্পনা) এখনও বেঁচে আছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তৃতীয় কৌশলটি হবে যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় ফেডারেল সরকারের সক্ষমতা জোরদার করা। এ জন্য শ্রম বিশেষজ্ঞদের চাকরিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, দক্ষতা বৃদ্ধি করা হবে এবং শ্রমিকদের শ্রম অধিকার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
বিকলেন বলেন, চতুর্থ যে বিষয়ে তারা জোর দেবেন তা হল মার্কিন প্রশাসন শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে বিভিন্ন দেশের সরকার এবং জি-২০ এবং জাতিসংঘের মতো বহুজাতিক সংস্থার সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করবে। এর মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে শ্রমিকদের অধিকারের মান নির্ধারণের কাজ করা হবে।পঞ্চম এবং সর্বশেষ হচ্ছে ‘আমাদের নিজস্ব বাণিজ্য চুক্তি, সরবরাহ চেইন, শ্রমিকদের সুরক্ষার বিষয়টি যথাযথভাবে তদারকি ও নিশ্চিত করব। পাশাপাশি জোরপূর্বক শ্রম দিয়ে তৈরি পণ্য আমরা আমদানি করব না।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী শ্রম পরিবেশ উন্নত করতে প্রেসিডেন্ট বিডেনের নির্দেশ এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে বৈদেশিক সাহায্য এবং কর্মসূচি প্রণয়ন, আইন প্রয়োগ, বিশ্ব বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা ও প্রতিশ্রুতি।