সম্প্রতি বিভিন্ন ধরনের অপ্রীতিকর কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ছে জনপ্র্রতিনিধিরা। যার ফলে সমাজে তাদের প্রতি নেতিবাচক ধারনা সৃষ্টি হচ্ছে। জনগনের প্রতিনিধি হয়ে এমন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে জন্য তাদের প্রতি আস্থার হারিয়ে ফেলছে সাধারন মানুষ। প্রশ্ন উঠছে জনগনের সেবক হয়ে যদি তারা এমন কান্ডে জড়ায় তাহলে কাদের নিকট তারা সেবার প্রত্যাশা করবে। এবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গৃহবধূর সাথে খারাপ কাজের অভিযোগ উঠল শালিখা উপজেলার গঙ্গারামপুর ইউনিয়নে।
মাগুরায় শালিখা উপজেলার গঙ্গারামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হালিম মোল্যার বিরুদ্ধে আদালতে খারাপ কাজের মামলা দায়ের করেছেন দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধূ।
রোববার মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক প্রণব কুমার দাস মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
আদালতে দায়ের করা খারাপ কাজের মামলার বাদী ওই গৃহবধূর বাড়ি শালিখা উপজেলায়। অপরদিকে চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মোল্যা বামনখালী গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার বাদীর অভিযোগে বলা হয়, চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম দীর্ঘদিন স্বামীর অনুপস্থিতিতে তার বাড়িতে আসা-যাওয়া করেন এবং নানা প্রলোভন, ভয়ভীতি ও বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে দিয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি তাকে আগের স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটান। কিন্তু পরে তাকে আর বিয়ে করেননি। উপরন্তু সর্বশেষ ১৬ জুলাই শনিবার রাত ৯টার দিকে তার সাথে জোরপূর্বক খারাপ কাজ করেন চেয়ারম্যান। রোববার আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি।
আদালতে মামলার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী মির্জা হাফিজ জানান, মামলাটি থানায় নথিভুক্তির জন্য আদালতে আবেদন করা হলেও মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বিষয়টি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ওই গৃহবধূর সাথে খারাপ কাজ করেছেন – এমন ভিডিও এবং স্থিরচিত্র বাদীর কাছ থেকে পাওয়া গেছে; যেটি মোবাইল ফোনে সংরক্ষিত আছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে রোববার আদালতে মামলা দায়েরের পর একটি টিনের চালার ঘরের মধ্যে গৃহবধূ ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হালিমের ঘনিষ্ঠতার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এছাড়া গঙ্গারামপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে চেয়ারম্যানের কক্ষে দুজনের ঘনিষ্ঠতার একটি ছবিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে ঘনিষ্ঠতাকে দুজনের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক হিসেবে দেখা হয়।
খারাপ কাজের মামলার বিষয়ে মামলার বাদী বলেন, চেয়ারম্যান বিভিন্ন সময়ে নানা কৌশলে ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার কাছে এসেছেন। আমি আমার জীবনের ভয়ে বাধা দিতে পারিনি। ঈদের আগে আমার স্বামীকেও পরিষদে ডেকে মারধর করা হয়। আমার ও আমার পরিবারের ওপর নির্যাতন দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় আমি মামলা করতে বাধ্য হচ্ছি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাবন্দি নেতা কাজী সালিমুল হক কামালের ভাই সোনা কাজী দীর্ঘদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় এসব মামলা সাজানো হতে পারে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও ও ছবির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই নারী একজন সদস্যের স্ত্রী। বিভিন্ন সময় আমার অফিসে এসে পাশে বসেছেন। কিন্তু আমি পুরোনো আমলের মানুষ। কীভাবে নোংরা ভিডিও তৈরি করা হয়েছে আমার জানা নেই।
প্রসঙ্গত, ভুক্তভোগী ওই নারীর অভিযোগ করেন পরিবারের কথা ভেবে তিনি মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন। তবে বিষয়টি সম্পর্ন অস্বীকার করে চেয়াম্যান দাবি করেন তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।