বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই অনেকটা একাকিত্ব হয়ে পড়েন ডলি আক্তার। কারো সঙ্গে ঠিক করে কথা তো বলেনই না বরং দিন দিন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলেন তিনি। আর এদিকে মাকে এ অবস্থায় দেখে ভালো লাগছিল না সন্তানের। শেষমেষ মায়ের এই একাকিত্ব দূর করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘মায়ের জন্য পাত্র চাই’ লিখে একটি স্ট্যাটাস দেন ঢাকার কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা মোহাম্মদ অপূর্ব।
সংবাদ মাধ্যমকে অপূর্ব বলেন, বাবার মৃত্যুর এক বছর পর মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি কি আবার বিয়ে করতে চাও? তখন মা রাজি হননি। কয়েকদিন পর মাকে আবার বললাম, তুমি কি একাকীত্বে ভুগছ? আমার কাছে এটাও মনে হয়েছিল যে মানুষ একা থাকতে পারে না। সেই ভাবনা থেকেই তাকে বিয়ের কথা বলেছিলাম।
শুরুতে বিয়ের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না ডলি আক্তার। তবে অপূর্ব মাকে ভালো রাখতে, একাকীত্ব দূর করতে বারবার মায়ের সঙ্গে বিয়ের কথা বলে। এক পর্যায়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত সন্তানের ওপর ছেড়ে দেন।
অপূর্ব বলেন, “একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল আমার মা ভালো নেই। তার কাউকে দরকার। কারণ আমার ভাই আর আমি ব্যস্ত। মাকে সময় দিতে পারিনি। তাই তিনি আমাদের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলেন।
মায়ের বিয়ে নিয়েও সামাজিক বাধা ছিল। তবে অপূর্ব জানান, দাদা ও দাদীর সম্মতিতে মায়ের জন্য স্বামী খুঁজছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘অনেকে ভাবে মাকে বিয়ে দেব, এ কেমন কথা? কিন্তু ইসলাম বলে, বিধবা রাজি হলে তাকে বিয়ে দিয়ে দাও। আমরা সেইসব চিন্তা মাথায় নিয়েই এগিয়ে গেলাম। আমাদের পরিবারের সবার সম্মতি আছে।
বিয়ের পর মা কোথায় থাকবে? ছোটবেলায় মায়ের সঙ্গে দূরত্ব বাড়বে না? সেই প্রশ্নও ছিল অপূর্বর জন্য।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি চাই আমার মা এলাকায় বা আশেপাশে বিয়ে করুক। যাতে আমি যখন খুশি মায়ের কাছে যেতে পারি। কিন্তু বিয়ে ঈশ্বরের হাতে। তার ভাগ্যে যেখানে লেখা আছে সে যাবে। এটা নিয়ে আমাদের কোনো অনুশোচনা নেই। তবে একটু কষ্ট হবে। মা আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। তাকে দূরে যেতে দেওয়া খারাপ হবে।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপূর্বর ঐ স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে রীতিমতো নানা সমালোচনা করতে শুরু করেন নেটিজনেদের অনেকেই। তবে এবার বিষয়টি বুঝতে পেরে ইতিবাচক মন্তব্য করেছেন অনেকেই।