সম্প্রতি শিক্ষকদের সাথে বিভিন্ন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটচ্ছে। যার ফলে বিভিন্ন মহলে শিক্ষকদের সাথে এমন অপ্রীতিকর আচারন নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়। শিক্ষক সমাজ যদি সমাজে তাদের সম্মান নিয়ে চলতে না পারে তাহলে এ জাতি কিভাবে সামনের দিকে অগ্রসর হবে বলে মন্তব্য করেন অনেকে। এমপির মারধর নিয়ে এবার রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজা যা বললেন।
রাজশাহী-১ আসনের (তানোর-গোদাগাড়ী) সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী কলেজ অধ্যক্ষকে মারধর করেননি। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদটিকে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মনগড়া বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজা।
বুধবার (১৩ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রকাশিত খবর নিয়ে তিনি পুলিশ বা প্রশাসনের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। বরং সংবাদপত্রে এটি প্রকাশের পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সংবাদটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে স্ট্যাটাস দেন তিনি।
অধ্যক্ষ সেলিম রেজার দেওয়া স্ট্যাটাসটি ছিল এরকম- ‘১৩ জুলাই দেশের একটি অন্যতম সংবাদ মাধ্যমে আমাকে ও এমপি মহোদয়কে নিয়ে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে, তা মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং মনগড়া। এমপি সাহেবের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, একটি কুচক্রিমহল গত ১৫ জুলাই তানোর উপজেলায় ওমর ফারুক চৌধুরীর সুনাম, উন্নয়ন ও জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে বানোয়াট, কাল্পনিক, ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করেছে।
তিনি আরও লিখেন, ‘মো. সেলীম রেজা অধ্যক্ষ, সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে, গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিয়ে আমার বাসায় প্রবেশ করেন এবং আমাকে অভিযোগ করার জন্য বিভিন্নভাবে উস্কানি দেয় ও আমার ছবি তোলার চেষ্টা করে। আমি কোন ভাবেই তাদেরকে ছবি তুলতে দেইনি। আমি কোনো প্রকার অভিযোগ বা মন্তব্য প্রকাশ করিনি তার পরেও আমাকে ও এমপি মহোদয়কে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করেছেন। আমরা কয়েকজন অধ্যক্ষ ঈদ উপলক্ষে এমপি সাহেবের অফিসে দেখা করতে গিয়েছিলাম এসময় নিজেদের তর্কবিতর্ক হয়। এছাড়া কোন ঘটনা ঘটেনি।’
এদিকে অধ্যক্ষকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। ওমর ফারুক চৌধুরী দাবি করেন, গত ৭ জুলাই কলেজের কয়েকজন অধ্যক্ষ তার চেম্বারে তার সঙ্গে দেখা করতে যান। তখন অধ্যক্ষদের মধ্যে ঝগড়া হয় এবং ওই সময় তিনিই তাদের থামান।
অন্যদিকে অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ জুলাই) বিকেলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বুধবার (১৩ জুলাই) অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে মারধর ঘটনা জানার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. মোঃ মশিউর রহমান এই তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। ঘটনার বিস্তারিত জেনে কমিটিকে যত দ্রুত সম্ভব সরেজমিনে গিয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন উপাচার্য।
উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান বলেন, অধ্যক্ষকে মারধরের ঘটনায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরপরই পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।