সম্প্রতি ক্ষমতার প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে আভ্যন্তরীন কন্দোলে জড়িয়ে পড়ে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ নেতারা। কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারন সম্পাকদের নেতৃত্বে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুন ফেরদৌসীকে মারধর ঘটনায় উত্তেজনার সৃষ্টি। পরে বিষয়টি নিয়ে আন্দোলন শুরু হয় এবং সভাপতি-সাধারন সম্পাকদের বিচারের দাবি করে মারধরে শিকার ওই নেত্রী। ঘটনার একপর্যায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ১৬ জন বহিষ্কার করে তার পর থেকে এখনো উত্তেজনা চলচ্ছে।
রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসীকে রুম থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নির্যাতনের অভিযোগে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক মোছা. রাজিয়া সুলতানাসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ইডেন কলেজের নুজহাত ফারিয়া রোকসানা, আয়েশা ইসলাম মিম, নূরজাহান, রিতু আক্তার, আনিকা তাবাসসুম স্বর্ণা ও কামরুন নাহার জ্যোতি।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর হাকিম সৈয়দ মোস্তফা রেজা নূরের আদালতে জান্নাতুল ফেরদৌসি এ মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত আরও ২৫/৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত বাদীর বক্তব্য গ্রহণ করে পরবর্তীতে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
বাদীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন নূরে ই আলম। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী আমির আলী, আনোয়ার হোসেন মনির, সরকার রাশেদুল ইসলাম, আবুল কালাম ও মাজেদুর রহমান।
গত কয়েকদিন আগে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সিট বাণিজ্য ও নানা অসঙ্গতি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুন ফেরদৌসী। এ ঘটনার পর শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় হলের কক্ষে গিয়ে তাকে টেনেহিঁচড়ে বের করে আনেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নুজহাত ফারিয়া রোকসানা, আয়েশা ইসলাম মিম, কামরুন নাহার জ্যোতি, শিরিন আকতার, রিতু, স্বর্ণা, নূরজাহান, ফেরদৌসী, লিমা, পপি, বিজলীসহ আরও কয়েকজন।
নেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসির নি/র্যাতনের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে।ডিওতে শোনা যায়— জান্নাতুল ফেরদৌসী তাদের বলেন, ‘তোমাদের সঙ্গে আমার কোনো কথা নেই। আমি প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারির সঙ্গে কথা বলবো। তখন কক্ষে উপস্থিত এক নেতাকে বলতে শোনা যায়, ‘প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি বাইরে বসে আছেন’।
পরে জান্নাতুল ফেরদৌসীকে টেনেহিঁচড়ে পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। এরপর তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায় বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী জান্নাতুল ফেরদৌসী বলেন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে আমার ওপর হা/মলা হয়েছে। আমাকে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি অসুস্থ। অথচ আমিসহ যারা এ ঘটনার প্রতিবাদ করলো তাদের বহিষ্কার করা হলো। এটা কেমন অন্যায়!
ইডেনে ছাত্রলীগের সিট বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসীর দেওয়া বক্তৃতার ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করা এক সাংবাদিক বলেন, আমি কিছুদিন আগে ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের সিট বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করি।এতে সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসী সাক্ষাৎকার দেন। ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের অন্য নেত্রীরা যখন জান্নাতুল ফেরদৌসীর কক্ষে প্রবেশ করেন তখন সে আমাকে কল দেন। আমি কলটি রেকর্ড করে রাখি। পরে তাকে বের করে নেওয়ার সময় উপস্থিত নেত্রীরা ফোন কাটতে বাধ্য করেন। পরে আমি ফোন করলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের একাংশ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা দিনরাত বিক্ষোভ করে। পরদিন আবারও বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগের একাংশ। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা। এসময় দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। একই দিনে রাতে কলেজে ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত করে ১৬ জনকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
প্রসঙ্গত, মা/রধর ও নির্যাতনসহ অন্যান্য অভিযোগ করে তিনি আদালতে মামলা করেছেন বলে জানান ওই নেত্রী। সে দিনের ঘটনায় যারা জড়িত ছিল তাদের নাম উল্লেখ করাসহ আর বেশ কয়েজনকে আসামী করেছেন বলে জানা যায়।