Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / এবার মন্দা মোকাবেলায় ভিন্ন তথ্য দিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী

এবার মন্দা মোকাবেলায় ভিন্ন তথ্য দিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী

ইউক্রেন- রাশিয়া সংকটের কারনে বিশ্ব অর্থনীতে মন্দার সৃষ্টি হয়েছে। যার প্রভাব অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পড়েছে। যার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। যার কারনে দেশের প্রতিটি জনগণকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী।তবে এ সংকট আরও তীব্র হওয়ায়া সম্ভবনা রয়েছে ২০২৩ সালে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুল মান্নান। এ সমস্যা থেকে বাঁচতে দুর্নীতি পথ বন্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করে যা জানালেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

আগামী বছর সারা বিশ্বে মন্দা প্রত্যাশিত মন্দা মোকাবেলায় বাংলাদেশের কী প্রস্তুতি ? বাংলাদেশ কীভাবে মন্দা মোকাবেলা করবে? পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুল মান্নান ডয়চে ভেলের কাছে এ বিষয়ে তাঁর মতামত জানিয়েছেন৷

ডয়চে ভেলে: আগামী বছর বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা রয়েছে আমাদের প্রস্তুতি কেমন?

আবদুল মান্নান: বিভিন্ন সচেতন মহল, বিশেষ করে অর্থনীতিবিদরা মন্দার আশঙ্কা করেন যখন উন্নত অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দেয়, তখন আমরা তাকে অধস্তন অর্থনীতি বলতে পারি; আমরা বিশ্ববাজারের অংশ তাদের সাথে আমরাও বিশ্ববাজারে বিক্রি করি, ক্রয় করি, ইত্যাদি ইত্যাদি।, তাই সেখানে মন্দা হলে আমাদের এখানেও তা ঘটবে। তা এড়ানোর কোনো উপায় নেই। আমরা কী ব্যবস্থা নিতে পারি? যেহেতু এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা, তাই চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানির মতো বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির দেশেগুলো ঘরে ফিরে আসার জন্য ব্যবস্থা নেবে এবং তারা যদি মন্দা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে পায়, আমরাও আশা করি। আমরা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে প্রভাব বিস্তার করার মতো অবস্থায় নেই। যদি আমরা কৃষিতে উৎপাদন বজায় রাখতে পারি, যদি স্থানীয় বাজারে চালের সরবরাহ বজায় রাখতে পারি, তাহলে অনেক কিছু উপশম হবে। আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়বে। ঋণের বাজা/রও সংকুচিত হবে। বিশ্বব্যাংক বা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংককে অর্থায়ন করে যদি তারা মন্দার মধ্যে পড়ে যায়। তারা যতই কড়াকড়ি করবে, এসব প্রতিষ্ঠানের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা কমে যাবে তখন আমরা হাত বাড়ালে ঋণ পাব না যদিও এখানে একটি কথা আছে, বিশ্ব অর্থনীতি মন্দায় গেলে আমরা ঋণ নেব এমন কোনো কথা নেই। দুটি কৌশল অবলম্বন করতে হবে একটি হল অভ্যন্তরীণ বাজার অর্থাৎ কৃষি, যা অনানুষ্ঠানিক খাতে যারা কায়িক শ্রম করে তাদের সমর্থন করে শক্তিশালী করাতে হবে। সারা বিশ্বের উত্তাপ আমাদের উপর থাকবে। আমাদের কৌশলের সাথে এটি মোকাবেলা করতে হবে। আরেকটি হলো আমাদের সা/শ্রয়ী হতে হবে। উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা কাট/ছাঁট হবে। বেল্ট কোমরে বেঁধে রাখতে হবে। এগুলিই আমদের করণীয়।

‘সরকারি, বেসরকারি ও পারিবারিক পর্যায়ে খরচ কমাতে হবে’

বাংলাদেশের কোন খাতে সবচেয়ে বেশি প্র/ভাব পড়তে পারে?

মন্দা হলে আমরা রপ্তানি খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হব। আমরা জামাকাপড়, শাকসবজি, মাছের মতো মাঝারি পণ্য রপ্তানি করি। পশ্চিমা দেশগুলোতে মন্দা থাকলে এসবের চাহিদা কমে যাবে। চাহিদা কমলে কোথায় পাঠাব? সুতরাং আমাদের রপ্তানির উপর একটি আঘাত হবে। এটি আমাদের প্রাথমিক এবং প্রধান আঘাত। আরেকটি হল পশ্চিমা মন্দা মধ্যপ্রাচ্যে আসবে।ফলস্বরূপ, আমাদের কর্মীদের যারা শারীরিকভাবে কাজ করে তাদের চাহিদাও হ্রাস পাবে। ফলস্বরূপ, তাদের আয় কম হবে। কমে গেলে তারা দেশে কম টাকা পাঠাবে ফলে এখানে আঘাত লাগবে।এসব কারণে আমাদের সরকারি ব্যয় অনেক কমাতে হবে বেসরকারি খাতেও সংশ্লিষ্টরা ব্যয় পুনর্বিন্যাস করবেন যাতে জরুরি ব্যয় কম হয়। পরে খরচ মন্দা চিরকাল থাকবে না, মন্দারও একটা সময় আছে। কিছু দিন পর, মন্দাও উঠে দাঁড়াবে তারপর আমরাও দাঁড়ানোর সুযোগ পাব। পুরো বিশ্ব অর্থনীতি এখন একটা শৃঙ্খলে। আমরা আগের মতো আলাদা নেই। এই বিষয়ে ভাল জিনিস হল যে আমরা বাকি বিশ্বের সাথে এগিয়ে যেতে পারি। খারাপ দিকটি হল, আমরা ইউক্রেনের যু/দ্ধের জন্য দায়ী নই, আমরা বিশ্বব্যাপ ছড়িয়ে পড়া রোগের জন্য দায়ী নই, আমরা ভূ-রাজনৈতিক স্ট্রেটার জন্য দায়ী নই, কিন্তু আমরা এর শিকার। আমাদের পথ সীমিত তাই কোমরে বেল্ট বেঁধে তিন তরকারি দিয়ে ভাত না দিয়ে দুই তরকারি দিয়ে ভাত খাইলে কেউ মানা ক/রতে পারবে না। কিছু নির্মাণ কাজ যা দুই বছর পর করলে কোনো সমস্যা হবে না সেগুলো আমারা করবো না। তাহলে আমরা যদি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষির মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো রেখে বাকিগুলো কাটছাঁট করি, তাহলে আমার মনে হয় পার হতে পারব। কিছু তো বা/ধা আসবেই।

রিজার্ভ কে/মন টান পড়তে পা/রে আমাদের?

রেমিটেন্স কমে গেলে। রপ্তানি কমে গেলে। রিজার্ভে অবশ্যই টা/ন পড়বে। এই উভয় ক্ষেত্রেই একটি বড় ব্যবধান তৈরি হয় বিদেশী সাহায্যের সাথে ঋণও রিজার্ভের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু তারপরে আমরা ঋণ কমিয়ে দেব। তারপর তারা কম ঋণ দেবে। আমরা কম ঋণ নেব। মন্দা সর্বত্রই ঘটবে ফলস্বরূপ।, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

বর্তমান রিজার্ভ সংকট আমরা কতটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি?

এখনও কোনও সংকট নেই এখনও একটি সম্মানজনক স্তরে এখনও ৩০-৩৫ বিলিয়ন ডলার রয়েছে। তাই আমি আশা করি এটি যথেষ্ট। তবে হ্যাঁ, চাপের মধ্যে আছি। সত্যিই পশ্চিমা বিশ্বে মন্দা হয়, তবে আমাদের চাপ বাড়বে। সংকট না পড়/লেও আমরা সঙ্কটের কাছাকাছি থাকব।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মন্দার আ/শঙ্কা করছেন। আমরা কতটা প্রস্তুত?

আমি এতক্ষণ ধরে প্রস্তুতির কথা বলেছি। মূল প্রস্তুতি হল আমাদের নিজে/দের ঘর গোছােনে। খরচগুলোকে পুনর্বিন্যাস করা। দুই দিন পর যে খরচ করলে হবে তা কাটছাঁট করুন। আমরা জরুরী খরচ কমাব না।এতে বাজারের ক্ষতি হবে মানুষের আয় আরও কমে যাবে। আমরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য কৃষিতে খরচ আগের মতো বজায় রাখব। কল্যাণ ব্যয় করতে হবে অবশ্যই।

দুর্নীতি বন্ধ করা কি আমাদের কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে?

দুর্নীতি বন্ধে আইন প্রণয়ন জোরদার করতে হবে। আমরাও সেটাই করতে চাই।এটা আইনের ব্যাপার। সরকার আইন প্রয়োগ করে না। সরকার দুর্নীতির মামলা দিয়ে আদা/লতে ধরে নিয়ে যাবে। আদালত বলতে পারবে সেখানে কী সিদ্ধান্ত হবে। আমরা আরও সক্রিয় হবো। দুর্নীতির বিষয়টি আরও সীমিত করব। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াব। যারা এই চাকরিতে আছেন তাদের ওপর নজরদারি বাড়াব।

আমরা কি আগের মন্দা থেকে কোন শিক্ষা নিয়েছি?

অনেক কিছু শিখেছি, ব্যবস্থা নিচ্ছি, আরও নেব।

মুদ্রাস্ফীতি কি খুব বেশি বাড়তে পারে?

মুদ্রাস্ফীতি কমছে। এই মাসে কমছে, পরের মাসে আরও কমবে। মন্দায় অনেক দাম প্রায়ই পড়ে যায়। বাজারে যদি কেউ পণ্য না কিনে, তাহলে মুদ্রাস্ফীতি আসবে কোথা থেকে? জনগণের ভোগান্তি এমন হতে পারে যে মানুষ কম দামেও পণ্য কিনতে পারবে না। যদি বর্তমান ৫০ টাকার চাল ২০ টাকা হয়ে যায় কিন্তু আমার যদি আয় না থাকে, তাহলে আমি কিভাবে কিনব?

সাধারণ মানুষকে টিকিয়ে রাখতে কী ধরনের প্রস্তুতি নে/ওয়া উচিত?

সরকারী, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পর্যায়ে খরচ কমাতে হবে। কম জরুরী খরচ কমাতে হবে। দুর্নীতির আরও পথ বন্ধ করতে হবে। কেনাকাটায় সতর্ক থাকতে হবে। আমি যা প্রয়োজন তা কিনব আমি অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনব না এবং ঘরে রাখব। যেখানে একই জিনিস কম দামে পাওয়া যায় সেট খু/জতে হবে। এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।

প্রসঙ্গত, প্রয়োজনের বাহিরে অতিরিক্ত কিছু ক্রয় করা যাবে না বলে মন্তব্য করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, সাশ্রয়ী হওয়ার বিকল্পন নেই।

 

About Babu

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *