স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে তিনটি আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বিএনপির তিন নেতা। তারা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বহিষ্কৃত উপদেষ্টা সৈয়দ একে একরামুজ্জামান, বগুড়া-৪ আসনে চারবারের সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মোল্লা এবং সিরাজগঞ্জ-৫ (চৌহালী) আসনে মেজর (অব.) আবদুল্লাহ আল মামুন বেলকুচি) আসন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, গত সোমবার বিকেল ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একরামুজ্জামানের পক্ষে মো. বকুল মিয়া নামে এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এর আগে পুলিশের দায়ের করা বিস্ফোরক মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে জামিন পান তিনি। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে যাওয়ার অভিযোগে গতকাল প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আরেক সদস্য একরামুজ্জামানকে।
এ বিষয়ে একরামুজ্জামান গনমাধ্যমকে বলেন, এটা স্বাভাবিক নিয়মেই হয়েছে। বিএনপি আমাকে বহিষ্কার করেছে, আমি বিএনপি থেকে বের হইনি। বগুড়া ব্যুরো জানায়, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নিজে গিয়ে মনোনয়নপত্র তোলেন বিএনপির টানা চারবারের এমপি ডা. জিয়াউল হক। দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকার পর হঠাৎ নির্বাচনে অংশগ্রহণের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি জানান, কেন্দ্রীয় নেতারা তাকে রাজনৈতিকভাবে অপমান করেছে। দুর্ভোগে পড়েছেন তার কর্মী-সমর্থকরা। সেই যন্ত্রণা দূর করতেই নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জ-৫ (চৌহালী-বেলকুচি) আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে জেলা নির্বাচন অফিস থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন বিএনপি নেতা মেজর (অব.) আবদুল্লাহ আল মামুন। ২০১৮ সালে দলীয় মনোনয়নে চৌহালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে তার জামাতা বেলকুচি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুলকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
এক দিনে বিএনপির চার নেতা বহিষ্কার : এক দিনে বিএনপির চার নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে এই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই চার নেতাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃতরা হলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান, কেন্দ্রীয় সহ-তাঁতীবিষয়ক সম্পাদক রাবেয়া সিরাজ, কেন্দ্রীয় সদস্য শাহ মো. আবু জাফর এবং জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা শাখার সদস্য মো. মাহাবুবুল হাসান। গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের এ তথ্য জানানো হয়।
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে অন্যান্য দলে যোগ দিয়ে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে। ‘একতরফা’ তফসিল প্রত্যাখ্যান করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্বে রয়েছে বিএনপি।