নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মোঃ আলমগীর বলেন, ‘অত্যন্ত সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রতিযোগিতামূলক ভোট হবে। আপনারা কেন্দ্রে আসেন আপনাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে নিরাপদে কেন্দ্রে আসুন। আপনি আপনার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন এবং নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন। আপনি বাড়িতে গিয়েও নিরাপদ থাকতে পারবেন।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভাওয়াল সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল ফতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসি আলমগীর বলেন, আমার এখানে আসার উদ্দেশ্য হলো নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়। যাতে ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেন। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা এমন পরিবেশ তৈরি করবেন যাতে সব ভোটার উৎসাহ ও আনন্দের সঙ্গে ভোট দিতে পারেন।’
উপস্থিত এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা শুধু গাজীপুরের ক্ষেত্রে নয়, সারা দেশের ক্ষেত্রেই। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলা হয়েছে এবং পর্যাপ্তভাবে কাজ করছে। কোথাও কোনো না/শকতা আছে কিনা? তা ছাড়া আপনাদের (মিডিয়া) মাধ্যমে আমরা জানি যে, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো না/শকতার উদ্যোগ নেওয়ার আগেই তাদের কোথায় ধরেছে। কেউ এ ধরনের না/শকতার চেষ্টা করলে তাদের ধরা হবে বলে সতর্কতা বাড়িয়েছেন তারা। এখন প্রযুক্তির যুগ। কেউ যদি না/শকতা করে এবং মনে করে আমি ধরা পড়ব না, আমি বেঁচে যেতে পারি; কিন্তু সেটা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘গুজব ছড়াবেন না, গুরুত্বও দেবেন না। আপনার কাছে যদি কিছু থাকে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানান। তারা তাদের (গুজব ছড়ানো) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ইসি বলেন, সব কাজই চ্যালেঞ্জ। আমি মনে করি না পৃথিবীতে চ্যালেঞ্জ ছাড়া কোনো কাজ আছে। সবসময় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার ইচ্ছা ও ক্ষমতা থাকতে হবে। যেহেতু নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে। কেন জানি এই রাজনৈতিক প্রহসনের অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন অপরাধ বলে একটা শব্দ আছে। অর্থাৎ নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের হু/মকি দেওয়া হয়। কোনো প্রার্থী, তার এজেন্ট, তার সমর্থক বা নির্বাচন পরিচালনার কাজে কোনো ধরনের বিঘ্ন ঘটানো আইনের অধীনে অপরাধ। আমরা শুধু বলেছি ১৮ ডিসেম্বরের পর যখন প্রতীক বরাদ্দ হবে বা নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হবে, তখন এ ধরনের কর্মকাণ্ড করা উচিত নয়। বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করায় তারা নির্বাচন প্রতিহত করার কথা জানিয়েছে। আমাদের ক্ষেত্রে এটা আইনের দৃষ্টিতে বেআইনি। সংসদ নির্বাচনের জন্য তাদের সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু রাজনৈতিক বা অন্যান্য কর্মসূচীর ক্ষেত্রে যা গণতান্ত্রিক বা সাংবিধানিক অধিকার, সে ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত আইন থেকে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। এতে আমাদের কোনো বাধা নেই।’
মতবিনিময় সভায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মাহবুব আলম, গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী শফিকুল আলম, গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কামরুল হাসানসহ স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।