আজ দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায় চলছে নানা দুর্নীতি-অনিয়ম। যে যেভাবে পারছে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। আর এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি এবার এমন একটি ঘটনা ঘটেছে পিরোজপুর মঠবাড়িয়ায়। জানা গেছে, এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মঠবাড়িয়া উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আসাদ উল্ল্যাহ’র সেই ঘুষ বাণিজ্যের কথোপকথনের অডিও ফাঁস হয়েছে। আর এ অভিযোগে ওই সার্ভেয়ারকে গতকাল সোমবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে বিভাগীয় কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আসাদ উল্ল্যাহ অফিসটিকে ঘুষ বাণিজ্যের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছে। তার ঘুষ বাণিজ্যের একটি অডিও ফাঁস হলে বিষয়টি মঠবাড়িয়ায় টক অফ দ্যা টাউনে পরিনত হয়ে। ডিসিআর পাইয়ে দেয়ার নাম বলে তিনি ঘুষ দাবি করেন। আর ওই ঘুষ দিতে এসে আতিক নামে একজন যুবক গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি গ্রেপ্তারের পর তার মুঠোফোনে থাকা ওই সার্ভেয়ারের কথোপকথোন ফাঁস করেন তার স্বজনরা।
ওই কথোপকথন থেকে জানা গেছে, আতিক নামের ভুক্তভোগীকে ডিসিআর পাইয়ে দিতে সার্ভেয়ারের ৫ লক্ষ টাকার ঘুষ দাবির করেন।
জানা গেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলার ধানিসাফা বাজারের মক্কা ফার্মেসীর মালিক মোঃ আতিকুল ইসলাম ঘর ভাড়া নিয়ে গত ৩ বছর ধরে ওষুধের ব্যবসা করে আসছেন। ডিসিআর সূত্রে ওই ঘরের মালিক স্থানীয় মিজানুর রহমান বাবু নামে এক ব্যক্তি।
জানা গেছে, ঘর মালিক মিজানুর রহমান বাবু ঢাকায় থাকায় সুযোগে ওই ভিটির ডিসিআর নিতে একটি পক্ষ চেষ্টা চালান। তারা সংশ্লিষ্ট অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে মিজানুর রহমান বাবুর ডিসিআর সংক্রান্ত নথি গায়েব করেন। পরবর্তিতে বাবু রাজস্ব দিতে গিয়ে নথি না থাকায় নবায়ন করতে পারেননি।
এদিকে সুযোগবাদী চক্রটি স্থানীয় তহশিলদার ও মঠবাড়িয়া ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আসাদ উল্ল্যাহ‘র যোগসাজশে আতিকের দখলে থাকা ভিটিটির ডিসিআর কেটে নেয়।
ডিসিআর কাটার পর আতিককে ওষুধের দোকান গুছিয়ে চলে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। আর এ চাপ প্রয়োগে প্রকাশ্যে আসে সার্ভেয়ার, অবৈধ ডিসিআরধারী এবং স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর নাম চলে আসে। এক পর্যায়ে গায়ের জোরে সম্প্রতি দোকানটি তালা মেরে আটকে দেয় তারা।
এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাখাওয়াত জামিল সৈকততের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদিকদের জানান, সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ওঠা এ অভিযোগের আলোকে গতকাল সোমবার (২২ নভেম্বর) তাকে প্রত্যাহার করে বিভাগীয় কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়।
তবে এদিকে নিজের বিরুদ্ধে আসা এ অভিযোগ রীতিমতো অস্বীকার করেছেন আসাদ উল্ল্যাহ। একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ঐ অডিওটি এডিটিং করা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।