কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজাকে হত্যার ঘটনায় তিনি ভারতের সঙ্গে উস্কানি বা উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে চান না। তিনি চান নয়াদিল্লি বিষয়টিকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখুক। অনলাইন এনডিটিভি এ খবর দিয়েছে।
এর আগে জাস্টিন ট্রুডো সোমবার সংসদের জরুরি অধিবেশন ডেকেছিলেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজার হ”ত্যার সঙ্গে ভারত সরকার সরাসরি জড়িত থাকতে পারে। একইদিন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলোনি জোলি ভারতের কূটনৈতিক মিশনের একজন সিনিয়র কূটনীতিককে গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্ট উল্লেখ করে তাকে কানাডা থেকে বহিষ্কার করেন।
জবাবে ভারতও কানাডার একজন সিনিয়র কূটনীতিককে পাঁচ দিনের মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তারা জানিয়েছে যে তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং কানাডার সাথে যোগাযোগ করছে।
শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজার হ”ত্যার উত্তেজনা ভারত এবং কানাডায় সীমাবদ্ধ থাকলেও এটি বিশ্বজুড়ে শিরোনাম হয়েছে। মঙ্গলবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সাংবাদিকদের কাছে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, আমরা উস”কানি বা উত্তেজনা চাই না। আমরা যা চাই তা হল ভারত সরকারের সাথে কাজ করা যাতে সবকিছু পরিষ্কার করা যায় এবং যথাযথ প্রক্রিয়া নেওয়া হয় তা নিশ্চিত করা।
হরদীপ সিং নিজা হত্যার বিষয়ে জাস্টিন ট্রুডোর অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।
এর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে যে, কানাডায় যে কোনও ধরণের সহিং”সতায় ভারত সরকারের জড়িত থাকার অভিযোগগুলি বিদেশী এবং উদ্দেশ্যমূলক।
উল্লেখযোগ্যভাবে, হরদীপ সিং নিজার (৪৫) নিষিদ্ধ খালিস্তান টাইগার ফোর্সের প্রধান। সে ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী। ১৮ জুন কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে দুই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাকে গুলি করে হ”ত্যা করে। ট্রুডো দাবি করেছেন যে, কানাডা তদন্তে ভারত সরকারের জড়িত থাকার বিষয়ে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ তথ্য পেয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে ভারত সফরের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা আপডেট করেছে কানাডা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেমন তার নাগরিকদের ভ্রমণ সতর্কতা জারি করে। এর আগে কানাডার নাগরিকদের জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তর-পূর্ব ভারত, বিশেষ করে আসাম এবং সহিংসতা-বিধ্বস্ত মণিপুর ভ্রমণের বিরুদ্ধে সতর্ক করা হয়েছিল।
সদ্য আপডেট হওয়া ভ্রমণ সতর্কতায় হরদীপ সিং নিজার বা পাঞ্জাবের খালিস্তান আন্দোলনের উল্লেখ নেই। এতে বলা হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সহিংস বিক্ষোভ, নাগরিক অস্থিরতা, সন্ত্রাসী এবং চরমপন্থী কার্যকলাপের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। প্রতিনিয়ত জঙ্গি ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার ফলে বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে। যেকোনো সময় আবারও হাম”লা হতে পারে।
কানাডিয়ানদের সতর্ক করা হয়েছে, আপনি ভুল সময়ে ভুল জায়গায় থাকতে পারেন। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম ও মণিপুর রাজ্যে বেশ কিছু চরমপন্থী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে। তারা নিয়মিত স্থানীয় সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীকে টার্গেট করে। তাদের কর্মকান্ডের অর্থায়নের জন্য বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড ব্যবহার করতে পারে। রাজ্যে জাতিগত উত্তেজনা সংঘ”র্ষ এবং নাগরিক অস্থিরতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।