আহসান আলী ওরফে ভাদাইম্যা, এই পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ কৌতুক ভিডিও দর্শকের মাঝে উপহার দিয়েছেন। সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় এই অভিনেতা। তার নাম আহসান আলী হলেও বেশিরভাগ মানুষ তাকে ভাদাইম্যা নামেই চেনে। তার কারণ, এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা ভাদাইম্যা নামে একটি ক্যাসেট বের করেন যে ক্যাসেট খুব অল্প সময়েই বেশ ভাইরাল হয়। এরপর থেকে সবাই তাকে এই নামে ডাকতে শুরু করে।
ভাদাইম্যা খ্যাত আহসান আলীর ( Ahsan Ali ) না ফেরার দেশে চলে যাওয়ায় শো//কাহত ঢাকাই চলচ্চিত্রের কৌতুক অভিনেতা শামিনুর রহমান ( Shaminur Rahman ) ওরফে চিকন আলী। তাঁর চলে যাওয়া কমেডির জন্য বিরাট ক্ষতি বলে মনে করেন তিনি। কমেডির সঙ্গে আঞ্চলিক ভাষার সমন্বয় ঘটিয়ে নতুন উপাদান তৈরি করেছেন আহসান আলী। এক সংবাদ মাধ্যমের কর্মীর সঙ্গে আলাপকালে এমনটাই জানালেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় এই কৌতুক অভিনেতা চিকন আলী।
তিনি দুঃখ করে বলেন, একজন কৌতুক অভিনেতা না ফেরার দেশে চলে গেছেন, বিষয়টি আমি মেনে নিতে পারছি না। আহসান আলী ভাই তার আঞ্চলিকতাকে যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, আমি আর কোনো কমেডিয়ানকে এমন ভাবে অভিনয় করতে দেখিনি। সারাদেশে কৌতুকের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের ( Tangail ) ভাষাকে জনপ্রিয় করেছেন তিনি। কিন্তু একজন লোক নীরবে চলে গেল। কেউ বা কোনো সংগঠন তাকে স্মরণ করেনি।
চিকন আলী এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, তিনি নিজে আহসান আলীকে অনুসরণ করতেন। তিনি বলেন, আহসান আলী ভাই যেভাবে টাঙ্গাইলকে জনপ্রিয় করেছিলেন, আমিও উত্তরবঙ্গকে জনপ্রিয় করে উত্তরবঙ্গের ভাষাকে জনপ্রিয় করতে চেয়েছিলাম। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই অভিনয় করতে এসেছি। তিনি সবসময় আমার জন্য একটি মহান অনুপ্রেরণা হয়েছে.
নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে চিকন আলী বলেন, একবার শুটিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। আমাকে কোনো একটি হলে যেতে হয়েছিল। একজন ছাত্রকে দেখলাম ‘ভাদাইম্যা’ ভিডিওটি দেখছে আর হাসছে। বুঝেছি. তাকে জিজ্ঞেস করলাম, কেমন লাগছে? তিনি বলেন, আহসান আলী ভাইয়ের ভিডিওগুলো তার খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে টাঙ্গাইলের ভাষা। তিনি নিজে ওই অঞ্চলের হলেও ঢাকায় থাকায় আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা হয় না। তবে বেশ উপভোগ করেছেন।
টাঙ্গাইলের ৫০ বছর বয়সী কমেডিয়ান আহসান আলী রোববার ঢাকার একটি হাসপাতালে প্রয়াত হন। আহসান আলী দুই স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন। আহসান আলী ২০০০ সালে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যোগ দেন। সারা টাঙ্গাইল সাড়া ফেলে কমেডিতে। পরে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। হাজার হাজার ক্যাসেট বের করলেন। সব ক্যাসেটই বিশাল হিট। সেই সময় থেকেই ভাদাইম্যার সাথে আহসান আলী নামটি যুক্ত হয়। ডিজিটাল যুগে ক্যাসেটের বদলে ইউটিউব চ্যানেল খুলেছে তিন বছর আগে।