সুপারিশবঞ্চিত একজন প্রার্থীর মামলার কারণে বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় ২৮ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ আবারও বন্ধ হয়ে গেছে। এর আগেও এই নিয়োগ নিয়ে একটি মামলা হয়েছিল। মামলার জটিলতা কাটিয়ে চূড়ান্ত সুপারিশ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুমতি চেয়েছিল বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আবারও মামলার কারণে এ নিয়োগ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
তবে এনটিআরসিএ বলছে, মামলা সংক্রান্ত জটিলতা কমাতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগের মামলাগুলোর মতো এ মামলার জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করা সম্ভব হবে।
এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান এনামুল কাদের খান গতকাল বুধবার দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, চতুর্থ জন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির চূড়ান্ত সুপারিশ করার জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আগের নিয়োগে সুপারিশ না পাওয়া প্রার্থীর মামলার কারণে আবারো জটিলতা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি আইনগতভাবে মোকাবিলা করা হবে এবং শীঘ্রই চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক সুপারিশকারীদের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হবে।
এনটিআরসিএ জানায়, তৃতীয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে সু/পারিশবঞ্চিত সমাজবিজ্ঞানে পাস করা প্রার্থীর মামলার কারণে হাইকোর্ট নিয়োগ প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে।
এনটিআরসিএর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। চেম্বার জজ আদালত থেকে ইতিবাচক রায় পাওয়ার পর শিগগিরই এই নিয়োগের জন্য প্রাথমিক সুপারিশকারীদের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হবে।
এর আগে গত ১৭ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়ে চিঠি দেয় এনটিআরসিএ। ওই চিঠিতে ২৭ হাজার ৭৫৪ জন শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন চাওয়া হয়। নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশসহ গত ১২ মার্চ চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ৩২ হাজার ৪৩৮ জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। এসব প্রার্থীদের মধ্যে ভিআর ফরম সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের ৬৮ হাজার ৩৯০টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য গত বছরের ২১ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করে এনটিআরসিএ। এর মধ্যে স্কুল-কলেজে শিক্ষকের ৩১ হাজার ৫০৮টি এবং মাদ্রাসা, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ৩৬ হাজার ৮৮২টি পদ শূন্য রয়েছে। সব পদই এমপিওভুক্ত।
বিজ্ঞপ্তিতে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া সহজ করার পাশাপাশি একজন প্রার্থী পছন্দের সর্বোচ্চ ৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদন করার সুযোগ পেয়েছেন। আপনি যদি এর মধ্যে সুযোগ না পান তবে আপনার যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির সুযোগ পেলে অন্য সংস্থায় যোগ দেবেন কিনা তা বেছে নেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়।
এর আগে এনটিআরসিএ ৫৪ হাজার ৩০৪টি শূন্য পদ পূরণের জন্য ৩০ মার্চ ২০২১ তারিখে তৃতীয় পাবলিক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। গত বছরের ১৫ জুলাই ফল প্রকাশিত হয়। সেখান থেকে ৩৪ হাজার ৭৩ জন শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়।