সরকারের বেঁধে দেওয়া মজুরি কাঠামোর বিরুদ্ধে আন্দোলনরত পোশাক শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছেন গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এরই অংশ হিসেবে সব পোশাক কারখানায় নতুন নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি পোশাক কারখানার গেটে ‘নিয়োগ বন্ধ’ লেখা ব্যানার টাঙাতে সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়েছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার পোশাক শিল্পের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে পোশাক শিল্প মালিকদের সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কারখানা ভাঙচুর করলেও প্রয়োজনে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।আরও উপস্থিত ছি/লেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, বিজিএমইএর সিনিয়র সহ-সভাপতি এস.এম. মান্নান (কোচি) এবং সহ-সভাপতি ও পরিচালকবৃন্দ।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়া রোগের-পরবর্তী মহামারী পরিস্থিতি, ইউক্রেন-রাশিয়া যু/দ্ধ, ইসরাইল-ফিলিস্তিন যু/দ্ধ ইত্যাদি কারণে ক্রয় আদেশ কমেছে। সম্প্রতি শ্রমিক অসন্তোষ, কারখানার কাজ বন্ধ, শ্রমিকদের মা/রধর, অ/গ্নিসংযোগ, ভাংচুর, মালামাল লুটপাট ইত্যাদি জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এ কারণে পোশাক শিল্প মালিকদের সঙ্গে বিজিএমইএতে বৈঠক হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনার পর সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, এখন থেকে বাংলাদেশে অবস্থিত সব পোশাক কারখানায় নতুন নিয়োগ বন্ধ থাকবে। প্রতিটি কারখানার গেটে ‘নিয়োগ বন্ধ’ লেখা ব্যানার টাঙাতে হবে।
সভার অন্যান্য সিদ্ধান্ত কারখানার মালিকদের চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়। এই সিদ্ধান্তগুলির মধ্যে রয়েছে-
– যেসব কারখানায় অ/গ্নিসংযোগ, ভাঙচুর বা মা/রামারির ঘটনা ঘটেছে, সেসব কারখানার কর্তৃপক্ষের উচিত ছবি ও ভিডিও সহ নিকটস্থ থানায় মামলা করা। আসামিদের নাম জানা না গেলে ‘অজ্ঞাতনামা’ উল্লেখ করে মামলা করা যাবে। মামলা দায়েরের সাথে সাথে বিজিএমইএর অতিরিক্ত সিনিয়র সচিবের কাছ থেকে এর একটি অনুলিপি পাঠাতে হবে।
– যে সকল কারখানার শ্রমিক কারখানায় প্রবেশ এবং কাজ করা থেকে বিরত থাকেন বা কারখানা ত্যাগ করেন, কারখানার মালিক বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ১৩(১) এর বিধান অনুসারে কারখানাটি বন্ধ করে দেবেন।
-কারখানায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও মারামারির ঘটনার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দ্রুত বিজিএমইএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে পাঠাতে হবে।
সাভার ও গাজীপুরের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ করছেন।
তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেন। যেখানে পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৫০০ টাকা। আগামী ডিসেম্বর থেকে তা কার্যকর হবে।
তবে সরকার নির্ধারিত বেতন কাঠামো প্রত্যাখ্যান করে ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শ্রমিক সংগঠনগুলো। চলমান আন্দোলনে অন্তত চার শ্রমিক নি/হত হয়েছেন। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানায় অ/গ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে। আন্দোলনের জেরে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।