Friday , November 15 2024
Breaking News
Home / Countrywide / এবার ব্যাংকগুলোতে সৃষ্টি নতুন সমস্যা, হারাচ্ছে আমানতকারী

এবার ব্যাংকগুলোতে সৃষ্টি নতুন সমস্যা, হারাচ্ছে আমানতকারী

কিছুদিন আগে দেশের একটি ইসলামী ব্যাংকের ঋণ কেলে”ঙ্কারির ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনায় আসে। এরপর থেকে ব্যাংকের আমানতকারীরা ব্যাংকটির অর্থ নিয়ে নানা ধরনের নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা শুরু করেছেন। এবার ঐ ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে আমানতকারীরা টাকা সরাচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে ভিন্ন চিত্রও দেখা গেছে, ব্যাংকটিতে টাকা জমা রাখছেন আমানতকারীরা। তবে কয়েকটি ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান ভিন্ন কথা।

এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফার করার বিষয়টি এখন ব্যাংক থেকে টাকা তোলার চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে। ব্যাংক থেকে টাকা তোলার হিড়িক পড়া শুরু হয়েছে- কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন গু”জব ছড়িয়ে পড়ে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রাজধানীর গুলশান ও বনানী এলাকায় ৮টি ব্যাংকের ১০টি শাখা ঘুরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। টাকা উত্তোলনের পাশাপাশি সেখানে জমাও করছেন গ্রাহকরা। তবে কিছু ব্যাংকে অনলাইন ও চেকের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর বেড়েছে।

কিছু ব্যাংকের গ্রাহকরা এখন তাদের টাকা রাখার জন্য একটি নিরাপদ ব্যাংক খুঁজছেন। এতে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা যাচ্ছে। কিন্তু বেশিরভাগ গ্রাহক নগদ টাকা না তুলেই অনলাইনে বা চেকের মাধ্যমে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তর করছেন। ফলে ব্যাংকে নগদ টাকার অভাব নেই।

রাজধানীর বিমানবন্দর সড়ক হয়ে বনানীতে প্রবেশের শুরুতেই বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক শাখা। গতকাল সকালে ব্যাংকের ওই শাখায় কোনো গ্রাহককে দেখা যায়নি। এবি ব্যাংকের বনানী শাখায় দুই গ্রাহক টাকা তুলতে এবং একজন গ্রাহক টাকা জমা দিতে আসেন। এমনকি এনসিসি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বনানী শাখায় গিয়ে দেখা গেছে স্বাভাবিক চিত্র।

বেসরকারি মালিকানাধীন সিটি ব্যাংকের বনানী শাখায় ৮-১০ জন গ্রাহককে অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। তাদের বেশিরভাগই তাদের ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ করতে এসেছেন। কেউ কেউ এসেছেন বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য নতুন হিসাব খুলতে। একজন গ্রাহক পাওয়া যায় যিনি টাকা তুলতে এসেছেন।

আবার ইকবাল সেন্টারের প্রিমিয়ার ব্যাংকের বনানী শাখায় ছিল বেশ ভিড়। তবে ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, এটাই ব্যাংকের স্বাভাবিক চিত্র।

প্রিমিয়ার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম রিয়াজুল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘যে পরিমাণ টাকা তোলা হয়েছে, একই পরিমাণ টাকাও জমা হয়েছে। আমাদের কাছে ২৯ হাজার কোটি টাকা জমা ছিল, এখনও আছে।

এরপর গুলশান-২ মোড়ের কাছে ইসলামী ব্যাংকের গুলশান করপোরেট ব্রাঞ্চে গিয়ে দেখেন শত শত গ্রাহক লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের বেশিরভাগই মাসিক সঞ্চয় প্রকল্পে জমা করতে এসেছেন। এছাড়া অনেকে অন্য ব্যাংকে টাকা স্থানান্তরের জন্য চেক জমা দিয়েছেন। একই চিত্র দেখা গেছে ব্যাংকটির গুলশান-১ শাখায়।

শরীয়াহভিত্তিক ইসলামী ব্যাংকগুলোতে কিছুটা তারল্য সংকট থাকলেও ভালো আমানত পাচ্ছে প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলো। বিশেষ করে প্রচলিত ব্যাংক যেগুলোতে ইসলামী ব্যাংকিং সেবা রয়েছে তারা ভালো আমানত পাচ্ছে।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, চলতি মাসের প্রথম সাত দিনে আমাদের আমানত বেড়েছে ১৯৫ কোটি টাকা। ফলে চলতি মাসে আমানত ৮০০ কোটি টাকা বাড়বে বলে আশা করছি। প্রতি মাসে আমানত বাড়ছে ৫২০ কোটি টাকা। এখন এক ব্যাংকের আমানত অন্য ব্যাংকে যাচ্ছে। এটা ভালো যে টাকা ব্যাংকের বাইরে চলে যাচ্ছে না। তাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে।’

এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা সরানো হচ্ছে, আমানতকারীরা এমন করলেও ব্যাংকে অর্থসংকট কখনো ঘটবে না। আর এদিকে যে সমস্ত ব্যাংক ঘাটতিতে পড়েছে, সেগুলো অন্য ব্যাংক থেকে টাকা ধার করতে পারে। তবে ব্যাংক থেকে যদি টাকা বাইরে চলে যায়, সে ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *