ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যারা ফেরত দেবে না তারা গাড়ি, বাড়ি ও জমি কিনতে পারবে না। ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমিয়ে সুশাসন ফিরিয়ে আনার এমন পথনকশা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যার মাধ্যমে আগামী ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে খেলাপি ঋণ ৮ শতাংশে নামাতে চায় আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
গতকাল রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় রোডম্যাপের পরিকল্পনা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
পরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের। এ সময় ১১ দফা রোডম্যাপ ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার যথাক্রমে ১০ ও ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হবে। এ ছাড়া ব্যাংকিং খাতে করপোরেট সুশাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে সীমাতিরিক্ত, বেনামি স্বার্থসংশ্লিষ্ট এবং জালিয়াতি, প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ বিতরণের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।
আবু ফারাহ মো. নাসের বলেন, ‘কোনো গ্রাহক ঋণ নিয়মিত পরিশোধ না করলে তাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এই খেলাপিদের সমাজে অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার সুযোগ তৈরি হবে। আগামী দিনে খেলাপিরা জমি কিনতে গেলে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে না। নতুন প্রতিষ্ঠান কিংবা কম্পানি চালু, কিংবা ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারবে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে চিঠি দেওয়া হবে যেন তাদের কোনো সহযোগিতা না করা হয়। গাড়ি-বাড়ি কিনতে পারবে না। এমন অবস্থায় পড়তে কোনো ব্যবসায়ীই চাইবে না। তাই তারা ঋণ নিয়মিত পরিশোধ করবে।’
তিনি বলেন, ‘দুর্বল ব্যাংক সংস্কারের এই সকল বড় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মূলধন, খেলাপি ঋণসহ চারটি সূচকের মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করা হবে। সবল কোনো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক একীভূত হবে। যদি কেউ এ ধরনের প্রস্তুতি না নেয়, তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে একীভূত করে দেবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, বর্তমানে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৯.৯৩ শতাংশ।