আওয়ামী লীগ বিএনপিকে সঙ্গে নিতে চায় বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন কমিশনের সিডিউলের মধ্যে এলে তাদের নিয়েই নির্বাচন হবে।
রোববার (১২ নভেম্বর) সচিবালয়ে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
বিএনপি ছাড়াই কি দেশে নির্বাচন হচ্ছে, নাকি শেষ পর্যন্ত বিএনপির অংশগ্রহণের জন্য অপেক্ষা করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা চাই বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। তারা বলছেন, তাদের যে এত জনপ্রিয়তা, তা যাচাই করা হোক। তাদের কত উদ্যমী কর্মী যে ২০ মিনিটে মাঠ ছেড়েছে। তাদের জাদরেল নেতা পুলিশের আওয়াজ দিয়ে- কোন গু/লি ছোড়া হয়নি, কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়নি, ছোটবেলায় যে বড় বাজি করতাম তা শোনা গেল, সেই আওয়াজ দিয়েই মঞ্চ ছাড়লাম। তারা নির্বাচনে আসুক, এসে দেখি তারা কতটা জনপ্রিয়। এসব নেতাকে কর্মীরা কতটুকু বিশ্বাস করে? আমরা তাদের সঙ্গে নির্বাচন করতে চাই। নির্বাচনের সিডিউলের মধ্যে এলে তাদের সঙ্গে নির্বাচন হবে।
যদি তারা না আসে? এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি দেশে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নির্বাচন হতে হবে। একটি দল না এলেও আরও অনেক দল অংশ নেবে। ব্যাপক জনসম্পৃক্ততা থাকবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, যেখানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের প্রতিটি শহর-গ্রাম বদলে যাচ্ছে, অন্যদিকে দেশকে ধ্বং/স করতে জনগণের গাড়ি-ঘোড়ায় পেট্রোল বো/মা নিক্ষেপ করা হচ্ছে।তারা কোন উন্নয়ন দেখে না।”
মন্ত্রী মনে করেন, সবার কথা বলা উচিত তাদের থামানো উচিত।
বিএনপি আগের দিন অবরোধের ডাক দিয়ে হা/মলা করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এটা কি কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হতে পারে? স/ন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বললেও কম বলা হয়।
তারা রাস্তায় নেমে ব্যারিকেড দেয়। আমরা অবরোধ দেখেছি, আপনারা লক্ষ্য করুন। তারা তা করে না, লুকিয়ে আক্রমণ করে। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হতে পারে না। বলেন হাছান মাহমুদ।
বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে জাতিসংঘের বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ, তাদের (বিএনপি) আন্দোলন করার অধিকার আছে। সরকারের পদত্যাগ চাওয়ার অধিকার আছে, পদত্যাগ চাওয়ার অধিকার আমার আছে। সেই অধিকার মানে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো নয়। কেউ সমর্থন করেনি, করেও না। ইউরোপীয় পার্লামেন্টে অনেকেই তাদের কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেছেন। তারা নানাভাবে অনেককে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। তাদের কর্মকাণ্ডকে কেউ সমর্থন করতে পারে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বৈঠকের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতে যে বৈঠক হয়েছে সেটি ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। সেই বৈঠকের বিষয় তাদের একা। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে তা পত্রিকায় আছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচন, বাংলাদেশের উন্নয়ন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। অবশ্যই ভারত যা বলেছে তা ঠিক। বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে নির্বাচনের মাধ্যমে কারা ক্ষমতায় আসবে।
খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি সরকারের হাতে নেই। খালেদা জিয়ার মুক্তি আইনের হাতে, আদালতের হাতে। সরকার চাইলেও তাদের মুক্তি দিতে পারে না। সরকারের যা ক্ষমতা ছিল তার সাজা স্থগিত করে সরকার তাকে বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করেছে, বাকিটা আদালতের ব্যাপার।
বিএনপি নির্বাচন করতে দেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনে না যাওয়া কোনো রাজনৈতিক দলের অধিকার। কিন্তু নির্বাচন ঠেকানোর এখতিয়ার কারও নেই। নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলা মানেই দেশবিরোধী ও গণতন্ত্রবিরোধী কথা। তাই যারা দেশবিরোধী ও গণতন্ত্রবিরোধী বক্তব্য দেবে বা বিদ্বেষমূলক অপচেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলব। সরকার, জনগণ, রাষ্ট্রের দায়িত্ব গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা। সে জন্য যা যা করা দরকার, তা করা হবে।