কিছুদিন আগে জনস্বার্থে বেশ কয়েকজন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। শুধু পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নয়, বেশ কয়েকজন সচিবকেও অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। এবার পুলিশ সুপার (এসপি) ব্যারিস্টার মো. জিল্লুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠালো সরকার। এই আদেশ খুব শীঘ্র কার্যকর করা হবে।
সোমবার (২১ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডার সদস্য অতিরিক্ত কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) ব্যারিস্টার মোঃ জিল্লুর রহমানকে পাবলিক সার্ভিস আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৪৫ ধারার বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হলো। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। ’
জানা যায়, ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান এক সময় মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) ছিলেন। এ সময় উপজেলা নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সারাদেশের ডিসি-এসপিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে তিনি বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আমাদের চাকরিতে রাখবে না।’ তার বক্তব্যের জবাবে তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছিলেন, ‘আপনার পুলিশের এ সম্মানজনক পোশাক শরীর থেকে খুলে ফেলা উচিত। ’
এর আগে ১৬ নভেম্বর বিসিএস পুলিশ ক্যাডার সদস্য খুলনার তৃতীয় এপিবিএন ক্যাপ্টেন মোঃ আলী হোসেন ফকির (বর্তমানে রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত) সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন)-এর ৪৫ ধারায় বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হয়।
এর আগে ১৮ অক্টোবর সরকার তিন পুলিশ সুপারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায়। তারা হলেন সিআইডির পুলিশ সুপার মির্জা আবদুল্লাহ বাকী, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন মিয়া ও মো: শহীদুল্লাহ চৌধুরী। অতিরিক্ত দুই ডিআইজিও ৩১ অক্টোবর বাধ্যতামূলকভাবে অবসরে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি। মাহবুব হাকিম ও সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আলমগীর আলমও গত ১৬ অক্টোবর তথ্য সচিব মকবুল হোসেনকে বাধ্যতামূলক সরকারি চাকরি থেকে অবসরে পাঠানো হয়।
তবে যে সকল উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবসরে পাঠানো হয়েছে তাদের সরকার বিরোধী কর্মকান্ডের জেরেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামিতেও সরকারের উর্ধ্বতন কয়েকজনকে কর্মকর্তাদের অবসরে পাঠানো হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। এ বিষয়টি নিয়ে অনেক কর্মকর্তাদের মাঝে অনেকটা ভীতি কাজ করছে।