বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে সংরক্ষিত তিন শতাধিক লকারে কোনো অবৈধ সম্পদ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি বিশেষ দল অভিযান চালাচ্ছে। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার পর দুদকের ৮ সদস্যের দল ঢাকার মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখায় প্রবেশ করে। তাদের সঙ্গে রয়েছেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, যার উপস্থিতিতে এসব লকার খোলা হবে এবং ভেতরে থাকা সম্পদের তালিকা তৈরি করা হবে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, আদালতের নির্দেশনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর লকার খোলার পর আরও বেশ কিছু কর্মকর্তার লকার খোলার অনুমতি পেয়েছে দুদক। প্রাথমিকভাবে অন্তত ২৫ জন কর্মকর্তার লকার তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।
এর আগে, ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লকার খোলার অনুমতি দেন। এর আগেই, ২ ফেব্রুয়ারি দুদক বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়ে লকারগুলো সাময়িকভাবে ফ্রিজ করার নির্দেশনা দেয়।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে, ২৬ জানুয়ারি আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েন ভল্টে রাখা সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর সেফ ডিপোজিট থেকে ৫৫ হাজার ইউরো, ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার, ১০০৫.৪ গ্রাম স্বর্ণ এবং ৭০ লাখ টাকার এফডিআর উদ্ধার করা হয়। এসব সম্পদ তার আয়কর রিটার্নে ঘোষিত ছিল না।
এছাড়া, অন্যান্য কিছু কর্মকর্তার লকারেও অপ্রদর্শিত সম্পদ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুদকের অনুসন্ধান দল অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
৩০ জানুয়ারি দুদক চেয়ারম্যান ও অর্থ উপদেষ্টার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে সংরক্ষিত সম্পদ সংক্রান্ত আলোচনা হয়, যেখানে অর্থ উপদেষ্টা ভল্টে থাকা সম্পদ সাময়িকভাবে ফ্রিজের বিষয়ে সম্মতি দেন। দুদকের চিঠি এবং অর্থ উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী, বর্তমানে সব লকারের সম্পদ ফ্রিজ করা হয়েছে, যার ফলে লকারের মালিকরা এখন আর কোনো সম্পদ সরিয়ে নিতে পারবেন না।