তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সহযোগিতার পাশাপাশি আগামী পাঁচ বছর নতুন সরকারের সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক নিয়ে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে থাকায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কিছুটা শীতল সম্পর্ক রয়েছে। নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশ বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে আসছিল। নির্বাচনের দুই দিন পর যুক্তরাষ্ট্র এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
এ অবস্থায় নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সচিবালয়ে আসেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
বৈঠকের পর রাষ্ট্রদূত কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নতুন সরকারের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে চায়। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনায় দেশটি সহযোগিতা করবে। এটা প্রমাণ করে দুই দেশের সম্পর্ক এখনো ভালো।
তিনি আরও বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার রূপকল্প বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার তিনটি উদ্দেশ্য ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সফ্টওয়্যার এবং ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সবচেয়ে বড় আউটসোর্সিং গন্তব্য। আমেরিকা ৬০ টি দেশের মধ্যে একটি যেখানে আমরা সফ্টওয়্যার রপ্তানি করি। আমাদের আউটসোর্সিং গ্রাহকরা অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। কীভাবে আরও বাড়ানো যায় তা নিয়ে কথা হয়েছে।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোতে আমেরিকার প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে। গত পাঁচ বছরে এ খাতে ২৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। আবার ওরাকল, মাইক্রোসফটসহ বেশ কিছু আইটি কোম্পানি বাংলাদেশে কাজ করছে। আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আরও কোম্পানিকে আকৃষ্ট করতে চাই। সবশেষে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়।
একই দিন সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় ঢাকা-দিল্লি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার এবং ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের নিরাপত্তার জন্য বিজিবি-বিএসএফ সম্পর্ক বাড়ানো হবে। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। ভারত সরকার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নিজস্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, ভারত ২০২৩ সালে ১৬ লাখ বাংলাদেশিকে ভিসা দিয়েছে। ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার চেষ্টা চলছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রশিক্ষণ নিয়েও হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
এ সময় প্রণয় ভার্মা বলেন, নিরাপত্তা, অর্থনীতি ও যোগাযোগসহ দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আগামী পাঁচ বছর অব্যাহত থাকবে।