মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে নেতিবাচক ধারণা নিলেও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ দেশটি। বাংলাদেশকে একসময় তলাবিহীন ঝুড়ির সাথে তুলনা করে আলোচনায় বাংলাদেশকে একটি নেতিবাচক দিকে নিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। অপরদিকে ২৪ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষের উপর অন্যায়ভাবে শোষণ করে আসা পাকিস্তান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নের যে অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে সে সম্পর্কে প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রতি প্রশংসা করেছেন।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের অন্যতম আবেগ ও অনুভূতির একটি নাম। শনিবার (২৫ জুন) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এখন স্বপ্নের জয়ের সাক্ষী হচ্ছে। আমরা পারি, আমরাই পারবো, যেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায় বিশ্বে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। সারা বিশ্বে প্রশংসায় ভাসছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ তখনও স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছিল। ওয়াশিংটনে এক আলোচনায় তৎকালীন নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।
৫০ বছর পর পদ্মা সেতু উদ্বোধন করায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাইডেন প্রশাসন সেতুটিকে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক একীকরণের উন্নয়নে বাংলাদেশের নেতৃত্বের আরেকটি উদাহরণ বলে অভিহিত করেছে।
উদ্বোধনের আগের দিন শুক্রবার (২৪ জুন) ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ তৈরি করবে। একই সাথে এটি ব্যবসা-বাণিজ্যের গতিশীলতা বাড়াবে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পদ্মা সেতু ঢাকা ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষকে দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এতে সম্ভবত জিডিপি আরো ১.২ শতাংশ বাড়বে, অর্থনৈতিক প্রগতি হবে, পণ্যের যোগান সরবরাহের উন্নতি ঘটবে।
পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বন্ধুত্বপূর্ণ ভারতও ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে এত বড় একটি প্রকল্প সম্পন্ন করায় বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে দিল্লি। মোদি সরকার উল্লেখ করেছে যে দুই দেশ ভবিষ্যতেও অংশীদার হয়ে থাকবে।
উন্নয়ন সহযোগীদের অন্যতম জাপান পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকো বলেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় একটি চমৎকার মাইলফলক। আর তা সম্পন্ন হয়েছে বাংলাদেশের নিজস্ব উদ্যোগে এবং অর্থায়নে।
অস্ট্রেলিয়াও পদ্মা সেতুর প্রশংসা করেছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরেমি ব্রুয়ার বলেছেন, পদ্মা সেতু বঙ্গোপসাগরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে বাংলাদেশিদের তাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে আরও কার্যকরভাবে সংযুক্ত করে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশকে উন্নয়নের দিকে বহুগুণ এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশিদের জন্য বঙ্গোপসাগরের সাথে আরও সক্রিয় এবং কার্যকরভাবে যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়টিকে ত্বরান্বিত করবে, সেই সাথে সমস্ত বাংলাদেশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাড়িয়ে দিবে।