বাংলাদেশে রূপপুর পার”/মাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (এনপিপি) বিভিন্ন ধরনের সারঞ্জাম আমদানি করা হয় রাশিয়া থেকে, কিন্তু রাশিয়া থেকে যে জাহাজটি এই সকল সারঞ্জাম নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিল সেটা মার্কিন চাপের কারণে বাংলাদেশে ভিড়তে দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক দিক থেকে অনেকটা জল ঘোলা হয়। এদিকে জাহাজটি নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকার কারণে এমনটি হয়েছে। এবার এ বিষয় নিয়ে কথা বললেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা।
বাংলাদেশে মার্কিন চাপের কারণে রূপপুর পার”/মাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (এনপিপি) যন্ত্রপাতি আসতে এক মাসেরও বেশি সময় দেরি হয়েছে। মারিয়া জাখারোভা গত ১ ফেব্রুয়ারি মস্কোয় এ কথা বলেন। এ সময় তিনি রাশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ উরসা মেজরের উদাহরণ দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ওই জাহাজ ভিড়তে অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের চাপে সেই অনুমতি প্রত্যাহার করে নেয় বাংলাদেশ।
ঢাকায় রুশ দূতাবাস গত ২ ফেব্রুয়ারি তাদের ফে”সবুক পেজে ঐ বিবৃতি প্রকাশ করে।
“আমরা পশ্চিমাদের কাছ থেকে শুনেছি যে তারা ‘সংহতি’ বা ‘ঐক্যের ভিত্তিতে কাজ করছে’,” রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা “রুশ বিরোধী নিষেধাজ্ঞায় যোগদানের জন্য নিরপেক্ষ দেশগুলিকে আমন্ত্রণ জানানোর মার্কিন অনুশীলন” শিরোনামের একটি বিবৃতিতে বলেছেন। আমরা বারবার বলেছি, স্পষ্টতই, তারা ‘সংহতি’ কী তা বোঝে না। আমি মনে করি এটি একটি নতুন সমস্যা যা আমরা এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটো জুড়ে দেখছি। আমি এটাকে বলব ‘জোরপূর্বক সংহতি’। এটি অবশ্যই একটি ‘অক্সিমোরন’।
সংহতি এমন কিছু যা আত্মা থেকে, হৃদয় থেকে, আত্ম-বিশ্লেষণ থেকে আসে, রাশিয়ান মুখপাত্র এমনটাই বলেন। এটি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় এবং স্বাধীনভাবে একটি ইস্যুতে ঐক্য দেখানোর দৃষ্টিভঙ্গি। আমরা এখন যা দেখছি তা প্রকৃতপক্ষে ‘ফোর্সড ইন্টিগ্রেশন’।
মুখপাত্র বলেন যে, রাশিয়ার সম্ভাব্য সর্বাধিক ক্ষতি করার প্রয়াসে নিরপেক্ষ রাষ্ট্রগুলিকে রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্রমবর্ধমানভাবে দ্বিতীয় স্তরের নিষেধাজ্ঞার হু”/মকির আশ্রয় নিচ্ছে। তারা এটিকে ‘সংহতি’ বলে।
রুশ মুখপাত্র বলেন, গত ডিসেম্বরের ঘটনা একটি সুনির্দিষ্ট উদাহরণ। রাশিয়ান জাহাজ উরসা মেজরকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে আমেরিকানদের মংলা বন্দরে প্রবেশের জন্য তাদের পূর্বে জারি করা অনুমতি প্রত্যাহার করে নেয়। এই ঘটনাটি নির্মাণাধীন রূপপুর এনপিপির জন্য এক ব্যাচের সরঞ্জাম সরবরাহ করতে এক মাসেরও বেশি সময় দেরি করে। এটা বাংলাদেশের স্বার্থ বিরোধী।
“আমরা বিশ্বাস করি যে তৃতীয় দেশগুলিকে রুশ বিরোধী নিষেধাজ্ঞায় যোগ দেওয়ার জন্য মার্কিন প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং এটি বন্ধ করা উচিত,” রাশিয়ান মুখপাত্র এমনটি বলেন।
দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অগ্রগতিতে ধাক্কা লাগে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সরঞ্জাম বহনকারী রাশিয়ান জাহাজটি পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দরে অফলোড করার পরিবর্তে রাশিয়ায় ফিরে যায়। যার কারনে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ কিছুটা মন্থর হয়ে গিয়েছে। এদিকে রাশিয়ার এই জাহাজটির বদলে অন্য জাহাজ পাঠানোর কথা বলা হলেও তোয়াক্কা করেনি রাশিয়া।