মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে একটি সুসম্পর্ক স্থাপন ও স্থায়ী অংশীদারিত্বকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সেই সাথে তিনি বাংলাদেশের যে আমূল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে গত ৫০ বছরে সে বিষয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেন। আজ রবিবার যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের পরিচয়পত্র গ্রহণকালে লিখিত মন্তব্যে জো বাইডেন এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে রাষ্ট্রদূত ইমরান মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে পরিচয়পত্র তুলে দেওয়ার সময় রাষ্ট্রদূত ইমরান মার্কিন প্রেসিডেন্টকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে জো বাইডেন বলেন, মার্কিন প্রশাসন ভবিষ্যতের সুযোগ কাজে লাগাতে এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায়। মার্কিন প্রশাসন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের জন্য তার সাথে কাজ করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘২০২২ সালে ইউএস-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আমি বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের স্থায়ী অংশীদারিত্বের কথা দৃঢ়ভাবে স্মরণ করতে চাই।’
গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ‘একটি অসাধারণ গল্প’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবিক, শরণার্থী, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা, স”/ন্ত্রাস দমনে, সামুদ্রিক এবং অন্যান্য নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বাংলাদেশ তার বৃহৎ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিকে একটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক শক্তিশালায় রূপান্তরিত করেছে যা বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলের একটি প্রধান অংশ হয়ে উঠতে প্রস্তুত।’
বাইডেন আশা করেন ঢাকা ও ওয়াশিংটন গণতান্ত্রিক শাসন, জলবায়ু পরিবর্তন, শরণার্থী এবং সমুদ্র নিরাপত্তা নিয়ে কাজ চালিয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাফল্যে বিনিয়োগ করছে এবং সকল বাংলাদেশিদের স্বাধীনভাবে অংশগ্রহণ ও তাদের দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার ক্ষমতা সমর্থন করে। প্রায় ১০ লাখ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার থেকে আগত শরনার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “মার্কিন প্রশাসন মিয়ানমার থেকে আগত শরনার্থীদের ও তাদের আশ্রয়দাতাদের সহায়তার পাশাপাশি তাদের অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।” তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এই মানবিক সংকটের একটি টেকসই ও স্থায়ী সমাধান খুঁজতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগ সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘রোগটি গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যানের আওতায় বৈশ্বিক যে সংকট সৃষ্টি করেছিল সেটা মোকাবিলায় বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত। বাইডেন প্রশাসন ভবিষ্যতে এই ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বকে প্রসারিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের পর এই প্রথমবারের মতো হোয়াইট হাউসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইমরানসহ নবনিযুক্ত ১০ রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র সরাসরি গ্রহণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। এই পরিচয়পত্র গ্রহন করার সময় বাংলাদেশের বিষয়ে তিনি গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক আরো শক্তিশালী করার কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশের নির্বাচন বিষয়ে কোনো কথা উল্লেখ করেননি।