সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলাধীন পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনে গতকাল ভোটারদের তথ্য হালনাগাদ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব পালন করেন। সেই সময় বিপুল সংখ্যক লোক বিশৃংখলার সৃষ্টি করে যার কারণে সেখানে একটা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং সংঘ”র্ষময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় পুলিশের ওপর লাঠি এবং পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। গত শনিবার রাতে এই অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
আহ”ত হন থানার এসআই শামীম কবির (২৬), কনস্টেবল কানু বিশ্বাস (২৫), নান্টু চক্রবর্তী (২৬) ও জহির রায়হান (২৪)। আহ’তদের ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অস্থায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই রাতেই ঘটনাস্থল থেকে মাধব চন্দ্র দে (৬০) ও জয় চন্দ্র দে (২০)কে আটক করে পুলিশ। তাদের বাড়ি উপজেলার পাইকুরাটি গ্রামে।
সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, পুলিশের ওপর হাম”লা ও সরকারি সম্পত্তি ভাঙ”চুরের অভিযোগে ১১ জনকে আসামি করে অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে।
ধর্মপাশা থানা পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের একটি কক্ষে ওই ইউনিয়নের ভোটার তথ্য হালনাগাদের কার্যক্রম শুরু হয়। জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা ও ভোটার তথ্য হালনাগাদ করার জন্য ধর্মপাশা থানার দুইজন এসআই, দুইজন এএসআই ও ছয়জন কনস্টেবল এতে নিয়োজিত ছিলেন।
ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন চত্বরে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩৫০ জন ভোটার তথ্য হালনাগাদ প্রক্রিয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। ওইদিন রাত ৮টার দিকে উপজেলার পাইকুরাটি গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু দে পলাশ (৩০) এর নেতৃত্বে ভোটার হালনাগাদ প্রক্রিয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনকে ধাক্কা দিয়ে হঠাৎ করে কয়েকজন ভোটার তথ্য হালনাগাদ কক্ষে প্রবেশের চেষ্টা করে।
সেখানকার পুলিশ সদস্যরা বাধা দেন। এ অবস্থায় ক্ষি”প্ত হয়ে পিন্টু দে পলাশের (৩০) নির্দেশে হাম”লাকারীরা লাঠি, বাঁশ, পাথর, বালু ও মাটি নিয়ে পুলিশের ওপর হাম”লা চালায়। হাম”লায় ধর্মপাশা থানার এসআই শামীম কবিরসহ চার পুলিশ সদস্য আহ’ত হয়েছেন। হামলাকারীরা পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের বারান্দার ৫টি বেঞ্চ, ২টি চেয়ার ধ্বং”স করে এবং পরিষদ ভবনের একপাশে থাকা পুলিশ সদস্যদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলও ধ্বং”স করে।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আলী ফরিদ ও ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান একদল পুলিশ সদস্য নিয়ে সেখানে আসেন। হাম”লাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে মাধব চন্দ্র দে ও জয় চন্দ্রকে আটক করা হয়।
পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ওরফে ইকবাল বলেন, সরকারি কাজে বাধা, সরকারি সম্পত্তি ভাং”চুর ও পুলিশের ওপর গুন্ডা হাম”লার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ঘটনার সময় বিদ্যুৎ ছিল না। আমরা এ ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
ধর্মপাশা থানার এসআই আবদুস সবুর জানান, কর্তব্যরত পুলিশের ওপর হা”মলা, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও ভবন ভাঙার অভিযোগে শনিবার গভীর রাতে ধর্মপাশা থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি।
এ ঘটনায় যে দু’জনকে আটক করা হয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানা যায়। অন্য যেসকল আসামি রয়েছে তাদেরকে অতিসত্বর গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে। রোববার গ্রেপ্তারকৃত ওই দুই আসামিকে পুলিশ আদালতে প্রেরণ করেছে। এই ধরনের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে আরো তদন্ত করবে বলে জানা যায়।