দেশের মহিলা ফুটবলারা তাদের সাফল্যের মাধ্যমে যে গৌরব বয়ে নিয়ে এসেছে সত্যই প্রশংসীয়। তাদের এই সাফল্যে দেশের মানুষ ব্যাপক আনন্দ প্রকাশ করেছেন। অসাধারন ক্রিয়া নৈপুণ্যের মাধ্যমে এ বিজয় অর্জন করেছেন। প্রতিটি খেলোয়াড় তাদের সর্বোচ্চটা উজার করে দিয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন ঋতুপর্ণা চাকমা। ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমার বাহারি বেণীর রহস্য নিয়ে যে তথ্য বেরিয়ে এলো।
ঋতুপর্ণা চাকমা, বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। মাঠে তার পায়ের জাদু খেলার নৈপুণ্য ফুটিয়ে তোলে। আরেকটি দিকও আছে, যা দর্শকদের নজর এড়ায় না। ঋতুপর্ণার লম্বা বাহারি চুল। ছয়টি বেণী করে মাঠে নামেন এই ফুটবল তারকা।
খেলা তার ধ্যান-জ্ঞান। সৌন্দর্য নয় বরং খেলার জন্য সুবিধা পেতেই ছয়টি বেণী করেন তিনি। মাঠে নামার আগে অবশ্য এজন্য খানিকটা সময় বেশি ব্যয় করতে হয় তাকে। কেন এভাবে চুল বাধেন, ম্যাচের আগে চুল বাধতে ঋতুকে সাহায্যই বা কে করেন?
ঋতু জানিয়েছেন, ওর চুল লম্বা। খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন বলে এভাবে চুল এভাবে চুল বাধেন তিনি। মজার ব্যাপার হলো, কাউকে অনুকরণ নয়, চুলের এই বাহারি নকশার আইডিয়া ঋতুরই। সৌন্দর্যই মুখ্য নয়, সুবিধাকে প্রাধান্য দিতেই এভাবে ছয়টি বেণী করে মাঠে নামেন এই ফুটবল কন্যা।
দলের একজন আরেকজনের বন্ধু। সুখ-দুঃখের সঙ্গী। ক্যাম্প তাদের দ্বিতীয় বাড়ি। কখনো তার সতীর্থ ফুটবল দলের ফরোয়ার্ড শামসুন্নাহার আবার কখনো আরেক সতীর্থ সুরমা আক্তার এভাবে চুল বেধে দেন তাকে।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। বুধবার দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখেন ফুটবল কন্যারা। সেখান থেকে ছাদ খোলা বাসে শহর প্রদক্ষিণ করে বাফুফে কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছেন মেয়েরা। কিন্তু বাসে ওঠার পর আহত হন ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমা।
রাস্তার পাশে একটি বিলবোর্ড থেকে মাথায় আঘাত পান ঋতুপর্ণা। তার মাথার এক পাশ কেটে গেছে। এরপর তাকে টিম বাস থেকে নামিয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়। ঋতুপর্ণার মাথায় দুটি সেলাই লেগেছে। হাসপাতাল থেকে ফিরে তিনি বর্তমানে বাফুফে ভবনে রয়েছেন। ঋতুর জন্য শুভকামনা।
তৃতীয় শেণিতে থাকা অবস্থায় সমবয়সীদের সঙ্গে পুতুল খেলার কথা! ঘাড়ের উপর যদি বড়দের নেয়া শট উড়ে আসে! এই উদাহরণের নাম ঋতুপর্ণা। ইতিহাস গড়েছেন তিনি। ঐ বয়সেই মাঠ কাঁপিয়েছেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে। রাঙামাটি থেকে উঠে আসতে গিয়ে পাহাড়ের মতো চড়াই-উৎরাই পার হতে হয়েছে তাকে। সেখান থেকে তিনি এখন অনূর্ধ্ব-১৫ জাতীয় ফুটবল দলের সোনালি ইতিহাসের অংশীদার।
বাবা একজন কৃষক। অনেক সময় অনুশীলনে যাওয়ার টাকা ছিল না। বাবা ধার করে আনতেন। বাবা বলতেন, ভালো খেলো। জাতীয় দলে খেলতে হবে। ঋতুপর্ণা তার বাবার কথা রাখলেও তার বাবা ঋতুপর্ণার বিরাট সাফল্য দেখে যেতে পারেননি।
প্রসঙ্গত, তার চুলের মাধ্যমে তিনি বিশেষ একটি সুবিধা পান বলে জানা যায়। তবে জীবনে কঠিন সময় পার করে তিনি এই অবস্থানে এসেছেন বলে জানা যায়।