ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া বাঁশখালীর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে একটি মামলায় মুজিবুল হক চৌধুরী (৫৬) ও তার স্ত্রী সাহেদা বেগম নূরীকে (৪১) আসামি করা হয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক বাদী হয়ে দুটি মামলা করেন। তবে মামলা দুটির এজাহার রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদক চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মো. আতিকুল আলম।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, ইউপি মুজিবুল হক চৌধুরী জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫৬ লাখ ৭১ হাজার ১৪ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে নিজেদের দখলে রাখেন। এটি দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
অপর মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মুজিবুলের স্ত্রী সাহেদা জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ৮৬ লাখ ৬২ হাজার ৭৯৭ টাকার সম্পদ অর্জন করে দখলে রেখেছেন; যা দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দ্বিতীয় মামলায়, মুজিবুলকে তার স্ত্রীর নামে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহায়তা করার জন্য দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় একটি অপরাধ করার অভিযোগ আনা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৬ নভেম্বর আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে মুজিবুল হক চৌধুরী মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হুমকি দেন।সেই সমাবেশে তিনি বলেন, পিটার হাস বলছেন- এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। পিটার হাস আমরা আপনাকে ভয় পাই না। আমরা মোটা চালের ভাত খাই। আপনি বিএনপির ভগবান; কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগ ইমান বেচি না। আপনাকে এমন মারা মারব, বাঙালি কত দুষ্টু তখন বুঝতে পারবেন।
ওই সময়ে এই অভিযোগে ১৩ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরীর আদালতে এবং ২৯ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সালাহ উদ্দিনের আদালতে আলাদা আলাদা মামলার আবেদন করা হয়। তবে দুইবারই মামলার আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল।
এর আগে ২০২২ সালের ২৮ মে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনের সময় নির্বাচনী পথসভা চলাকালীন ইভিএম নিয়ে মুজিবুলের বিতর্কিত মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় তিনি হ্যান্ডমাইকে দেওয়া বক্তৃতায় বলেন, ‘রিকশায় করে বা যেভাবে পারেন এসে ভোট দিন। কারণ ইভিএমে ভোট হবে। ইভিএম না হলে সব সিল আমিই মেরে দিতাম, কাউকে খুঁজতাম না। কথা বোঝেননি, ইভিএমে আইডি কার্ড না ঢুকালে ভোট হয় না। হলে ভোট আমি রাতেই নিয়ে নিতাম। তাই আপনাদের কষ্ট করে সেটি (জাতীয় পরিচয়পত্র) নিয়ে যেতে হবে। মেশিনে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে হবে। আপনারা কষ্ট করে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। আঙুলের ছাপ দিয়ে ভোট দেবেন।। আপনি যদি ছাপ দিতে না পারেন, আমি ছাপ দেওয়ার জন্য লোকদের সেখানে রাখব।