বিগত কয়েক বছর ধরে বিনোদন জগত কাপিয়ে বাড়াচ্ছে টিক’টক লাই’কির মত প্রতিষ্ঠানগুলো। বিভিন্ন দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ এই যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তাদের নানা প্রতিভা দেখিয়ে চলেছে। প্রতিযোগিতামূলক এই সকল সোশ্যাল মাধ্যমগুলোতে কেউ অর্জন করছে ১ম স্থান আবার কেউ কেউ রয়ে যাচ্ছেন দর্শক হিসেবে। তবে যোগাযোগ মাধ্যম ফে’সবুকে প্রেম করে অনেকেই গৃহ ত্যাগও করেছেন। তবে এবার আলোচনায় এলো এক নেপালি তরুনী যিনি বিনোদন মাধ্যম টিক’টকের মাধ্যমে বাংলাদেশি ( Bangladeshi ) এক যুবকের প্রেমে পড়ে নিজ দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে এসেছেন।
একজন বাংলাদেশি ( Bangladeshi ), অন্যজন নেপালি। তাদের টিকটকের সাথে পরিচয় করিয়ে দিন। তারপর থেকে ধীরে ধীরে মন দেওয়া নেয়া। এভাবে আড়াই বছর কেটে যায়। এক পর্যায়ে তারা বিয়ের সিদ্ধান্তে আসেন। কিন্তু ওই তরুণীর পরিবার বিদেশি ছেলেকে নিয়ে আপত্তি জানায়। তবে তাদের ভালোবাসার পথে কোনো বাধাই দাঁড়াতে পারেনি। অবশেষে প্রেমের টানে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে চলে আসেন নেপালি বংশোদ্ভূত এক তরুণী। সে তার ভালোবাসার মানুষটিকে বিয়ে করেছে।
এমনটাই ঘটেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের সহনটি ইউনিয়নের হাতিহার ( Hatihar ) গ্রামের পলাশ পালের। তিনি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নিতাই চন্দ্র পাল ( Nitai Chandra Pal ) ও পূর্ণিমা রানী পালের ( Purnima Rani Pal ) ছেলে এবং অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতির ( Jyotika Jyoti ) ভাই।
অনুদেবী ভুজেল নেপালি বংশোদ্ভূত। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার নকশালবাড়ি ( Naxalbari ) এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। অনুদেবীর বাবা চাকরির জন্য ভারতে ( India ) থাকতেন। কিন্তু তার নানার বাড়ি নেপালে।
গত ৭ মার্চ ( March ) পলাশ পালের হাত ধরে বাংলাদেশে আসেন অনুদেবী ভুজেল। গত ১০ মার্চ ( March ) পলাশের বড় বোন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি ঢাকায় ( Dhaka ) তাদের বিয়ের আয়োজন করেন। সেখান থেকে ১১ মার্চ ( March ) ময়মনসিংহের গৌরীপুরে পলাশ পালের পরিবার বউভাত ( Bouvat )ের আয়োজন করে।
শনিবার (১২ মার্চ ( March )) বউভাত ( Bouvat ) দিবসের শুভেচ্ছা জানাতে আসেন ময়মনসিংহ-৩ ( Mymensingh-3 ) (গৌরীপুর) আসনের সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদসহ ( Nazim Uddin Ahmed ) স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।
পলাশ পাল এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমি গত ছয় বছর ধরে সিঙ্গাপুরে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করছি। সেখানে, টিকটকে নেপালের ( Nepal ) দেবী ভুজেলের ( Goddess Bhujel ) সাথে পরিচয় হয়। তিনি সিঙ্গাপুরের ( Singapore ) একটি বেসরকারি কোম্পানিতেও কাজ করতেন। সেই পরিচয় থেকেই আমরা কথা বলা শুরু করি। তারপর ধীরে ধীরে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এভাবে আড়াই বছর প্রেম করার পর একবারে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেই। প্রথমে অনুদেবীর পরিবার প্রথমে আপত্তি করলেও পরে মেনে নেয়। আমরা দেশে ফিরে বিয়ে করি।
পলাশ আরও বলেন, অনুদেবী নেপাল, ভারত ও বাংলা ছাড়াও আরও অনেক ভাষায় কথা বলতে পারেন। তাই সে সহজেই আমার পরিবারের সাথে মানিয়ে নিতে পারে।
পাত্রী এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, সিঙ্গাপুরে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করার সময় পলাশের সঙ্গে টিকটের পরিচয় হয়। তখনই আমি তাকে খুব পছন্দ করি। তাই পলাশকে আমার জীবন সঙ্গী করলাম। তাছাড়া ওর বাবা মা খুব ভালো। তারা আমাকে আপন করে নিয়েছে। তারা আমাকে তার নিজের মেয়ের মতো আদর করে।
পলাশের মামা রঞ্জিত কুমার পাল এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমরা অনুদেবীকে আমাদের নিজের মেয়ের মতো গ্রহণ করেছি, আশা করি তিনি পরিবারের অভাব বুঝবেন না।
অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি জাগো নিউজকে বলেন, চার ভাইবোনের মধ্যে পলাশ সবার ছোট। অনুদেবী তার পছন্দের কথা আগেই জানিয়েছিলেন। পলাশ তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল, তাই হয়েছে। বিয়ের মাধ্যমে তাদের প্রেম সফল হয়েছে।
পলাশের মা পূর্ণিমা রানী পাল এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমার ছেলে তাকে পছন্দ করে বিয়ে করেছে। তাছাড়া মেয়েটাও খুব ভালো। এটা অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের সবাইকে আপন করে নিয়েছে। তারা খুশি হলে আমরাও খুশি।
উল্লেখ্য, যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হয়ে প্রেমের সম্পর্ক আর প্রেম থেকে বিয়ে এমন ঘটনা নতুন নয় । তবে এই নেপালি তরুনী যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশি যুবকের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে নিজ দেশ ত্যাগ করে বাংলাদেশে ছুটে আসার বিষয়টা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের পরিবার তাদেরকে সদরে গ্রহণ করেছেন। তাদের প্রতিবেশীসহ বাংলাদেশের নেটিজেনরা তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।