প্রেমের টানে মানুষ অন্ধ এমন কথার সাথে অনেকেই পরিচিত। নিজের প্রেমিক-প্রেমিকার জন্য নিজের জীবনটাও দিতে দ্বিধা করে না অনেকে। এমন একটি ঘাটনা সম্প্রতি যোগাযোগা মাধ্যমে বেশ আলোচনায় আসে। এ ঘটনায় মূল আসামীর বিরুদ্ধে প্রয়াত প্রেমিকে আত্মহননের প্রহচানা দেওয়ার অভিযোগ উঠে। এরপর থেকে সে পলাতক ছিল। তবে বেশি দিন তা সম্ভব হয়নি। পুলিশ তবে ধরে জেল হাজতে প্রেরন করে।
এরপর তাকে আদালতে প্রেরন করা হয়। আত্মহত্যায় প্ররোচনার এ মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন প্রেমিকা সুরাজ ইসলাম মিম। শনিবার খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. আল-আমিন মিমের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার উপ-কমিশনার মো. আতিক মাহমুদ চৌধুরী জানান, গত শুক্রবার সকালে নড়াইল জেলার মাসুমদিয়া এলাকা থেকে মিমকে আটক করে র্যাব। রাতেই তাকে থানায় সোপর্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন মিম। তদন্তের স্বার্থে তা বলা যাচ্ছে না। রাতে সাক্ষ্য দিতে রাজি হলে সকাল ১০টার দিকে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। ৩ ঘণ্টা আদালতে ঘটনার কথা জানান মিম। ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আত্মহত্যায় প্ররোচনার জন্য মিম দায়ী।
মামলার তদন্তকারী অফিসার ইয়েস হারসিত মন্ডল বলেছেন যে প্রতিশ্রুতি 2020 সালে নর্দার্ন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছিল। এক সেমিস্টারে তাকে বড় মেমে উপস্থাপন করা হয়। পরিচয় থেকে প্রেম, তারপর সম্পর্ক গভীর হয়। মিম প্রায়ই প্রমিজের ডাইনিং রুমে সময় কাটাতেন। দীর্ঘ সময় অবস্থানের পর তিনি চলে যেতেন এবং তার ভাড়া বাড়িতে ফিরে যেতেন। তদন্তে জানা যায়, তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক ছিল। তদন্ত কর্মকর্তা জানান, প্রতিশ্রুতি যেদিন আত্মহত্যা করে সেদিন দুপুরে মিম বাড়িতে ছিলেন। মিম দোষ স্বীকার করে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। অন্যদিকে আত্মহত্যার প্ররোচনার ঘটনায় প্রমিজের চাচাতো ভাই জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, মিম প্রমিজকে বিয়ের জন্য চাপ দিতেন।
কিন্তু সে একজন মুসলিম হওয়ায় প্রতিশ্রুতি তাকে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। মাঝে মাঝে মিম নিহতের বাবাকে ফোন করে টাকা চাইতেন। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে মিমকে প্রমিজ মেসে ডাকা হয়। মি ২০শে জুন তার বাবার কাছে টাকা চেয়ে ড. একপর্যায়ে মিম রেগে গিয়ে ল্যাপটপ দিয়ে প্রমিসের মাথায় আঘাত করে। তাকে নানাভাবে অপমান করে ওই দিন ঝামেলা থেকে বেরিয়ে যান তিনি।
প্রতিশ্রুতি এমন আচরণে মানসিকভাবে হতাশ হয়ে পড়েন। ২২ জুন মিম প্রমিসের বাসায় ফিরে আসেন। দরজা বন্ধ দেখে পাশের ঘরে থাকা সোহান ও বিপ্লবকে ডেকে রুমের দরজা ভেঙে দিতে বলেন। ঠিক সেই মুহুর্তে দুজনে মিমের কথামত প্রমিসকে ডাকতে শুরু করলেও কোন উত্তর না দেখে প্রমিস ফ্যানের হুকে ঝুলে পড়ে। তারা দরজা ভেঙে তাকে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রতিশ্রুতি আত্মহত্যার পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় মিম।
এ ঘটনায় এখনো আদালত পুরোপুরি শিওর না এটা হত্যা না আত্মহত্যা। আসামী মিমের জবানবদ্ধী গ্রহনের পর তাকে পুনরায় জেল হাজতে প্রেরন করে আদালত। এই মামলার সত্য যাচাইয়ের জন্য পুলিশ তদন্ত এখনো চলমান বলে জানিয়েছেন, বাদী পক্ষের আইনজীবি।