Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / এবার প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিলো সরকার

এবার প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিলো সরকার

বৈদেশিক রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ানোর কৌশল হিসেবে আরেকটি নতুন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে কিছুটা হলেও সুফল পাওয়া যাবে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এখন থেকে, প্রবাসী বা বিদেশীদের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিতে খোলা অনিবাসী হিসাব বা ননরেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্টের (NFCDs) উপর সুদের হার বাড়ানোর ক্ষমতা ব্যাংকগুলোর উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ফলে এখন থেকে এই হিসাবের সুদের হার ব্যাংক নিজেই নির্ধারণ করতে পারবে। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী তারা এই হার বাড়াতে পারে। এর আগে এই হার নির্ধারণ করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ বিষয়ে রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের বিষয়টি জানাতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, দেশের ব্যাংকগুলোতে বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচাতে প্রবাসী বা বিদেশিদের জন্য এনএফসিডি অ্যাকাউন্ট চালু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যেমন, লন্ডন ইন্টারব্যাংক অফার রেট (লাইবর) ইউরো মুদ্রায় ছয়-মেয়াদী বন্ড সুদের হারের সমান সুদ প্রদানের বিধান রয়েছে। এ সুদের হার উঠানামা করে। সাধারণত এক থেকে দেড় শতাংশ থাকতো। সেজন্য সঞ্চয়কারীরা আমানতের বিপরীতে কম-বেশি সুদ পান। বর্তমানে ইউরো মুদ্রার মান কমছে। একই সঙ্গে কমেছে সুদের হারও। অনেক ক্ষেত্রে এই হার শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। যার কারণে প্রবাসীরা আর বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ করতে পারছেন না।

যারা আগে করেছে তারাও তুলে নিচ্ছে। এতে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। এই কারণে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে এবং NFCD অ্যাকাউন্টগুলির সুদের হার নির্ধারণের জন্য ব্যাংকগুলোকে ক্ষমতা দেয়। ফলে সে অনুযায়ী সুদের হার নির্ধারণ করতে পারবে ব্যাংকগুলো। এর ফলে তারা চাহিদা অনুযায়ী প্রবাসী রেমিটেন্স সংগ্রহ করতে পারবে।

ইউরোর সুদের হার কমলেও ডলারের সুদের হারও বেড়েছে। পাউন্ডে সুদের হার কমেছে কিন্তু এখনও ইতিবাচক। তবে ইউরোর সুদের হার শূন্যে নেমে এসেছে। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি তার সুদের হার কিছুটা বাড়িয়েছে, তবে এটি বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেনি। ডলারের সুদের হার দুবার বাড়ানো হয়েছে। যে কারণে এখন ডলারের চাহিদা অনেক বেশি।

শুধু প্রবাসীরাই এ সুবিধা পাবেন না। বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিক, কোম্পানি, ফার্মও এটি পাবে। তাদের মধ্যে কর্মরত কর্মচারীরাও এই সুবিধা পাবেন। এছাড়াও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড), অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড) এবং হাই-টেক পার্কগুলিতে সম্পূর্ণ বিদেশী মালিকানাধীন সংস্থাগুলিও এই সুবিধা পাবে। কিন্তু অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে বৈদেশিক মুদ্রায়।

সাম্প্রতিক সময়ে রেমিটেন্স কমে যাওয়া এবং আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দেশের রিজার্ভ চাপে পড়েছে। এ কারণে রেমিটেন্স বাড়াতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এর পরিমান বাড়ানোর জন্য সচেষ্ট রয়েছে। এরইমধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন ভাতা নির্ধারণ করেছে, যেখানে কমানো হয়েছে ভাতার পরিমাণ। এদিকে বিদেশ থেকে গাড়ি আমদানির বিষয়টি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার বিষয়টি আমাদের দেশেও প্রভাব ফেলেছে। যার কারণে সরকার আমদানি ব্যয় কমানোর চেষ্টা করছে।

About bisso Jit

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *