Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / এবার পোশাক খাত নিয়ে বড় ধরনের দুঃসংবাদ দিল ব্যবসায়ীরা

এবার পোশাক খাত নিয়ে বড় ধরনের দুঃসংবাদ দিল ব্যবসায়ীরা

বৈশ্বিক মন্দা ছাড়াও শ্রমিক আন্দোলনসহ নানা অপপ্রচারে দেশের পোশাক শিল্প বিপর্যয়ের মুখে পড়তে যাচ্ছে। নভেম্বর মাস শেষ হতে চললেও আসন্ন ফলের মৌসুমে তেমন বিদেশি অর্ডার পায়নি বাংলাদেশ। ফলে এসব আদেশ ভিয়েতনাম বা কম্বোডিয়ার মতো প্রতিযোগী দেশে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলো বর্তমানে বসন্ত-গ্রীষ্ম মৌসুমের পণ্য উৎপাদন করছে। চলতি মৌসুমের সবচেয়ে বড় পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি আগামী মার্চ পর্যন্ত ক্রেতাদের কাছে পণ্য পাঠানো হবে। কিন্তু ফলের মৌসুমের ক্রম নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। চলতি নভেম্বর থেকে মৌসুমের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্ডার আসার কথা থাকলেও বিদেশি ক্রেতাদের তেমন সাড়া নেই বলে জানিয়েছেন পোশাক ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ মো
নজরুল ইসলাম বলেন,

নভেম্বরে প্রত্যাশিত হারে যে অর্ডার আসার কথা ছিল তা আমরা এখনও পাইনি। আন্দোলনের প্রভাব কতদিন থাকবে তা নিয়ে শঙ্কিত ক্রেতারা। সে জন্য মার্চ থেকে মে মাসে যেসব পণ্যের ডেলিভারি হওয়ার কথা, তারা এখনো আমাদের অর্ডার দিচ্ছে না, রেখে দিয়েছে।

ইতিমধ্যেই বৈশ্বিক মন্দার কবলে থাকা দেশের পোশাক শিল্পের প্রবৃদ্ধি গত বছরের বেশির ভাগ সময় ধরেই ওঠানামা করছে। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে ঢাকা জোনে গার্মেন্টস ১৪ শতাংশ এবং চট্টগ্রামে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও নভেম্বরের ২০ দিনে কমেছে ২০ শতাংশ। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও ক্রেতাদের কাছ থেকে সাড়া না পাওয়ায় চলতি অর্থবছরের রপ্তানি আয় ধরে রাখা বর্তমানে একটি চ্যালেঞ্জ।

এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের চেয়ারম্যান এস এম আবু তৈয়ব বলেন,
এই মৌসুমে আমরা যে কয়টি অর্ডার আশা করেছিলাম, সে সংখ্যায় অর্ডার আসেনি। সুতরাং, আমরা মনে করি এই বছরটি সেভাবেই যাবে এবং অর্ডারের সংখ্যা আসলে কমে এসেছে।

আশানুরূপ অর্ডার না পাওয়ার কথা জানিয়ে বিজিএমইএর সহ-সভাপতি রকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘ক্রেতারা প্রতি সপ্তাহে বলছেন বুকিং নিশ্চিত করবেন। কিন্তু নভেম্বর মাস শেষ হয়ে এলেও এখন পর্যন্ত আমরা কোনো পণ্যের অর্ডার পাচ্ছি না। বর্তমানে আমরা যদি পারি বেতনের অংশটি কভার করার চেষ্টা করছি। কিন্তু আমরা তা করতে পারছি না, তাছাড়া আমরা অর্ডারগুলোও পাচ্ছি না।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রধান বাজার। আর এসব দেশে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প সম্পর্কে অপতৎপরতার মাত্রা তুলনামূলকভাবে বেশি। তাই ক্রেতাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে দেশগুলোর বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোকে এখনই ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পোশাক ব্যবসায়ীরা।

চিটাগাং চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক অঞ্জন শেখর দাস বলেন, এখন সময় এসেছে ক্রেতাদের বোঝানোর যে, তারা যদি বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদনের জন্য অর্ডার দেয়, তাহলে তারা নিরাপদে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে এবং নিরাপদে পণ্য উৎপাদন করতে পারবে বাংলাদেশ।” এখান থেকে সময়মতো মালামাল নিতে পারবেন।’

চলতি অর্থবছরের ২০ নভেম্বর পর্যন্ত সাড়ে চার মাসে তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি আয় হয়েছে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরে এ খাত থেকে রপ্তানি আয় ছিল ৪৬ বিলিয়ন ডলার।

সর্বশেষ বেতন কাঠামো অনুযায়ী দেশের পোশাক খাতের শ্রমিকদের মজুরি ৫৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশের গার্মেন্ট মালিকরা এই খরচ মেটাতে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত ক্রেতাদের কাছ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে নতুন বেতন কাঠামো আগামী মাস থেকে কার্যকর হবে। আর এতেই সংশয়ে পড়েছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প।

About Babu

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *