বাংলা সিনেমার আলোচিত অভিনেতা হিরো আলম। এক সঙ্গে গান, অভিনয়, প্রযোজনা কাজের সাথে জড়িয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন তিনি। বিভিন্ন সময় নিজের কাজের জন্য সমালোচনার মুখে পড়লেও সে বিষয় আমলেও না নিয়ে আপন মনে চলেন এই অভিনেতা। সম্প্রতি রবীন্দ্র সংগীত গাওয়ার পর থেকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন শেষ পর্যন্ত আইনি ঝামেলায়ও পড়েন তিনি। মধ্যরাত পর্যন্ত পুলিশ ফাঁড়িতে হিরো আলম এ প্রসঙ্গে যা জানাগেল।
সম্প্রতি হিরো আলমের বিরুদ্ধে রুবেল মুন্সী নামে এক তরুণকে তুলে নিয়ে হ/ত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ অভিযোগে শুক্রবার রুবেল মুন্সী গাজীপুরের শ্রীপুর মডেল থানায় হিরো আলমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণে দুজনকেই ফাঁড়িতে ডেকেছিল পুলিশ। কিন্তু অভিযোগকারী রুবেল মুন্সী পুলিশের ডাকে সাড়া না দিয়ে উল্টো মোবাইল ফোন বন্ধ রাখেন।
এদিকে রোববার মধ্যরাত পর্যন্ত শ্রীপুরের চকপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে রুবেল মুন্সির জন্য অপেক্ষা করছিলেন হিরো আলম। জানা গেছে, হিরো আলমের বিরুদ্ধে রুবেল মুন্সীর দায়ের করা অভিযোগের কোনো সত্যতা পায়নি পুলিশ।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার এসআই নাজমুল হক বলেন, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে টাকা আত্মসাৎ ও প্রা/ণনাশের হুমকির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, রোববার সন্ধ্যায় বাদী ও বিবাদীকে শ্রীপুর থানার চকপাড়া ফাঁড়িতে ডাকা হয়। ওই দিন মধ্যরাত পর্যন্ত পুলিশ ফাঁড়িতে বসে থাকার পর চলে যান হিরো আলম। কিন্তু অভিযোগকারী আসেননি।
হিরো আলমের অভিযোগ, ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার জন্য থানায় ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে রুবেল মুন্সী তার সম্মানহানী করেছেন। এবার মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সম্মানহানীর অভিযোগে রুবেল মুন্সীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করবেন বলে জানান তিনি।
গত ৫ আগস্ট কুমিল্লার মতলব থানার বড়াইলদা গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে রুবেল মুন্সি বাদী হয়ে হিরো আলম ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। রুবেল শ্রীপুরের মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকেন।
অভিযোগে বলা হয়, রুবেলের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মতলব থানার বড়াইলদা এলাকায়। তবে তিনি থাকেন শ্রীপুরের চকপাড়ায়। তিনি একসময় রাজধানীর রামপুরায় হিরো আলমের অনলাইন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে ১০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতেন। ২০২১ সালে হিরো আলম তার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ধার নেন। এ ছাড়া হিরো আলমের কাছে সাত মাসের বেতনের ৭০ হাজার টাকা জমা দেন তিনি। পরে মোট ৯০ হাজার টাকা ফেরত চাইলে হিরো আলম তালবাহানা শুরু করেন। এক পর্যায়ে পাঁচ মাস আগে চাকরি ছেড়ে শ্রীপুরে চলে আসেন। সেখানকার একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন।
গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় টাকা ফেরত দিতে হিরো আলমসহ অন্যরা রুবেলের কাছে শ্রীপুরে যায়। টাকা দেওয়ার কথা বলে তাঁকে গাড়িতে তুলে একটি খোলা স্থানে নিয়ে টাকা দেবে না বলে জানান। একই সঙ্গে হ/ত্যার হুমকি দেওয়া হয়। পরে তাকে তার ল্যাপটপসহ ভোর ৩টায় ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে হিরো আলম সোমবার বিকেলে দেশের একটি অন্যতম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, রুবেল মুন্সী মাঝেমধ্যে আমার অফিসে যেত। কিন্তু কোনো চাকরি করতো না। আমার ইউটিউব চ্যানেল এবং আইটির কোন সমস্যা হলে তা ঠিক করে দিত। ৫ মাস আগে রুবেল আমার ল্যাপটপ, জিমেইল আইডি, ফেসবুক আইডি পাসওয়ার্ড নিয়ে পালিয়ে চলে আসে। তাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছিলাম না। পরে জানতে পারি সে চকপাড়া গ্রামে আছে।
তিনি আরও বলেন, আমি গত ৪ আগস্ট তার কাছে এসে ল্যাপটপসহ সবকিছু দেওয়ার অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তিনি আমার অনুরোধ রক্ষা করেননি। পরে শুনি রুবেল থানায় অভিযোগ করেছেন।
প্রসঙ্গত, রুবেলের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত করেছেন তবে কোন প্রমাণ মেলেনি বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে কথা বলতে বাদি ও বিবাদীকে থানায় ডাকা হয়েছিল বলে জানানো হয়েছে।