সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। জানা গেছে, কুবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটিকে ঘিরে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতির প্রধান কারণ হিসেবে জানা গেছে। কুবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করার কারণে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা শুরু হয়। কিন্তু ভিন্ন একটি বিষয় সামনে এসেছে সাধারণের, আর সেটা হল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং পুলিশের সামনেই দুই পক্ষ অস্ত্রের মহড়া দিতে থাকে। সেই সময় তারা বেশ কয়েকটি পটকা ফাটানোর মাধ্যমে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ক্যাম্পাসে। কুবি প্রশাসন ও ওসির সামনে অস্ত্র মহড়া হলেও তাদের নীরব থাকতে দেখা গেছে।
সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা এ এলাহীর সমর্থনে ছাত্রলীগ নেতা মাহি হাসনাইন, ইকবাল খান, আমিনুলসহ বহিরাগতরা অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। কুবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজের সমর্থকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে বের হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসের গেটে অবস্থান নেয়। এ সময় উভয় দলের নেতাকর্মীদের রাম দা, ছেনি, হকি স্টিক হাতে দেখা যায়। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে আত’/ঙ্ক বিরাজ করছে।
ছাত্রলীগের একাধিক নেতা-কর্মী জানান, শুক্রবার রাতে কেন্দ্রীয় নেতারা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে কুবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ তার ফে’সবুক আইডিতে উল্লেখ করেন, কমিটি ভেঙ্গে যাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি দেওয়া হবে। রাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আধিপত্য বিস্তার করতে গতকাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগ ও বহিরাগতদের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘ”র্ষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রলীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দাবি করেন, বিকেল ৩টার দিকে ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী রেজা এলাহী গ্রুপ মুখোমুখি হন। তারা অস্ত্র হাতে একে অপরের মুখোমুখি অবস্থান নেয়। ফার্মেসির দশম ব্যাচের ছাত্র ছাত্রলীগ নেতা মাসুমকে ক্যাম্পাসে প্রক্টর ও ওসির সামনে রাম দা নিয়ে হেটে প্রকাশ্যে মহড়া দিতে দেখা গেছে। অস্ত্রের মহড়া সত্ত্বেও কুবি প্রশাসন ও ওসিকে নীরব থাকতে দেখা গেছে।
কুবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ অভিযোগ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ও পুলিশের সামনে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে ঢুকে আত”/ঙ্ক সৃষ্টি করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তী কমিটির প্রার্থী রেজা ই এলাহী বলেন, আমরা কেউ ক্যাম্পাসে যাইনি। তারা ক্যাম্পাসে আত’/ঙ্ক সৃষ্টি করে আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, এ ঘটনা নিয়ে আমরা প্রক্টর বডির সদস্য ও অন্যান্য হলের প্রভোস্টদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছি। উপাচার্য ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দেবাশীষ চৌধুরী যিনি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি এ ঘটনার বিষয়ে বলেন, আমরা ঘটনা জানতে পেরে এখানে ফোর্স নিয়ে চলে এসেছি, পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছি এবং এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি বেশ ভালো রয়েছে। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোন ধরনের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে দেয়া হবে না এবং যারা এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।