সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটিকে নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) স্বীকৃতি দেয়নি। পাশাপাশি ইসিপিও জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনে পিটিআই প্রার্থীরা দলের প্রতীক হিসেবে ক্রিকেট ব্যাট ব্যবহার করতে পারবেন না।
শুক্রবার শুনানি শেষে পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিকান্দার সুলতান রাজার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্যানেল এই সিদ্ধান্ত দেয়।
পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, কোনো রাজনীতিবিদ দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি তার দলীয় পদ এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্যতা হারান। বহুল আলোচিত তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইসলামাবাদের দায়রা জজ আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর গত কয়েক মাস ধরে পাকিস্তানের আদিয়ালা কারাগারে রয়েছেন ইমরান খান। ফলে সাংবিধানিক ধারা অনুযায়ী, তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ না করা পর্যন্ত পিটিআই চেয়ারম্যানের পদে থাকতে পারবেন না।
এ অবস্থায় গত ২৯শে নভেম্বর ইমরান খান দলের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং বিভিন্ন মামলায় তার প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার গহর আলী খানকে দলের নতুন চেয়ারম্যান মনোনীত করেন।
সেই সঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক পদেও রদবদল করা হয়। সাবেক মহাসচিব আসাদ ওমরের পরিবর্তে নতুন মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ পান আলী আমান গন্ডাপুর।
2শে ডিসেম্বর, পিটিআই পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার রাজধানী পেশোয়ারে একটি সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করে।
পাকিস্তানি মিডিয়ার মতে, পিটিআই-এর নতুন কমিটি গঠনের পর, দলের বিভিন্ন আঞ্চলিক শাখার নেতা-কর্মীরা নির্বাচন কমিশনে পিটিশন জমা দিতে শুরু করে এবং এটি বাতিলের অনুরোধ জানায়। বেশ কয়েকটি আবেদন পড়ার পর গত সোমবার থেকে এ বিষয়ে শুনানি শুরু করে ইসিপির পাঁচ সদস্যের প্যানেল। শুক্রবার তার রায় ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত, ইসিপিও এখনও পিটিআই-এর নতুন কমিটিকে স্বীকৃতি দেয়নি। নির্বাচন কমিশনের নথিতে এখনও পিটিআই চেয়ারম্যান হিসেবে ইমরান খানের নাম রয়েছে।
দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের আগে ইসিপির এই সিদ্ধান্ত পিটিআইয়ের জন্য বড় ধাক্কা। তবে পিটিআইয়ের সামনে এখনও সুযোগ রয়েছে। ইসিপির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারে দলের হাইকমান্ড।
এদিকে ইমরান নিজেও আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতের রায় স্থগিত চেয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করেন ইমরানের আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার শুনানিতে হাইকোর্ট আবেদনটি খারিজ করে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন। তবে, পরদিন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট চলমান ‘রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁস’ মামলায় ইমরানের জামিন মঞ্জুর করে। এই মামলার এক নম্বর আসামি হলেন ইমরান খান।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরপরই, ইমরানের আইনজীবীরা তার নিজ শহর এবং পাঞ্জাবের মিনাওয়ালির নির্বাচনী এলাকার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন।