বাংলা সিনেমার আলোচিত অভিনেত্রী পরীমণী। অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকের মনে স্থান করে নিয়েছেন আলোচিত এই অভিনেত্রী। বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে তিনি প্রায় আলোচনায় এসে থাকেন। বোট ক্লাবের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোচিত হয়েছিলেন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। এবার সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেসব অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ মামলা করলেন পরীমণি বিরুদ্ধে।
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ব্যবসায়ী ও বোট ক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদ।
বুধবার (৬ জুলাই) তার বিরুদ্ধে ভয়ভীতি, ভাঙচুর, হ/ত্যারচেষ্টা ও ও মারধরের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে বলে জানা যায়।
ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হাসানের আদালতে বোট ক্লাবের সভাপতি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
ওইদিনই আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। শুনানি শেষে আদালত মামলার আদেশের জন্য ১৮ জুলাই দিন ধার্য করেছেন।
এদিকে মামলায় নাসিরউদ্দিন উল্লেখ করেন, পরীমণি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহল সেবনে অভ্যস্ত। তারা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করে না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দেন। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে এবং দ্বিতীয়তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করে।
এতে আরও বলা হয়, দুপুর সোয়া ১টায় বাদী (নাসির উদ্দিন মাহমুদ) ও তার সহযোগী শাহ শহীদুল আলম ক্লাব থেকে বের হলে পরীমনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নাসিরকে ডাকেন। তাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ বসার অনুরোধও করেন তিনি। একপর্যায়ে পরীমণি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসিরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এতে নাসির উদ্দিন রাজি না হওয়ায় পরীমনি তাকে বকাঝকা করেন। নাসির এবং আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরীমণি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনও ছুড়ে মারেন। নাসিরের মাথায় ও বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন।
মামলার বাদী আরও বলেন, ‘পরীমনি ও তার সহযোগীরা তাকে (নাসিরউদ্দিন) মারধর ও হ/ত্যার হুমকি দেয় এবং বোট ক্লাব ভাঙচুর করে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে পরীমনি বাদী হয়ে সাভার থানায় নাসির উদ্দিনসহ দুইজনের বিরুদ্ধে খারাপ কাজ ও হ/ত্যার চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।
এর আগে, ২০২১ সালের ১৪ জুন ঢাকার সাভার থানায় নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু আমিরকে খারাপ কাজ ও হ/ত্যা চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত করে মামলা করেন পরীমনি। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কামাল হোসেন।
গত বছরের ১৮ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক হেমায়েত উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের সময় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন নাসিরসহ তিন আসামি। তবে দুই মামলায় দুই সপ্তাহ কারাভোগের পর গত বছর বুধবার (৩০ জুন) রাত ৮টার দিকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বছর চিত্রনায়িকা পরীমণির করা খারাপ কাজেরচেষ্টা ও হ/ত্যাচেষ্টা মামলায় জামিনের পর পাল্টা মামলা করবেন বলে জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ।
এ প্রসঙ্গে তখন তিনি গণমাধ্যমে তখন জানান, মিথ্যা অপবাদ, সম্মানহানি করা, পারিবারিকভাবে অপদস্থ করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে নায়িকা পরিমণির বিরুদ্ধে করব।
নাসির ইউ মাহমুদ আরও বলেন, আমি মামলা করতে প্রস্তুত। তবে কখন করব কীভাবে করব এটা আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করেই করব। আপনারা জানেন আমার সম্পর্কে যে ধরনের অভিযোগ করেছেন সবই মিথ্যা, পারিবারিকভাবে আমাকে হয়রানি করা হয়েছে। মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগের কারণে আমার দীর্ঘদিনের অর্জিত মান-সম্মান সবকিছুই মিশে গেছে।
উল্লেখ্য, পরীমণির বিরুদ্ধে মামলা করতে সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছেন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, তাকে মিথ্যা মামলা হয়রানি করেছেন পরীমণি। যার কারনে তিনি তার অর্জিত সুনাম হারিয়েছন।