Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / এবার পদ হারনো নিয়ে কথা বললেন পঙ্কজ, অভিযোগের তীর শাম্মীর দিকে

এবার পদ হারনো নিয়ে কথা বললেন পঙ্কজ, অভিযোগের তীর শাম্মীর দিকে

সম্প্রতি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আওয়ামীলীগের সকল পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথকে। জানা যায় দীর্ঘ ধরে তিনি দলের ভিতরে গ্রুপিংসহ নীতি বর্হিভূত কাজ করে আসছেন এতে স্থানীয় আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। তবে এ বিষয়ে নিয়ে এই সাংসদ ভিন্ন কথা বলেন, তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে সেগুলো সত্য নয়। তিনি এক প্রকার ষড়যন্ত্রের শিকার তার বিরুদ্ধে দলীয় প্রধনের নিকট ভুল তথ্য দিয়া হয়েছে।

ক্ষমতাসীন দলের সব পদ হারানোর দুই দিন পর মুখ খুললেন ব‌রিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ। বলেছেন, শেখ হা‌সিনার কাছে তার নামে মিথ্যাচার করা হয়েছে।

তার অভিযোগের তীর আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদের প্রতি। তিনি ও পঙ্কজ একই নির্বাচনি এলাকার মানুষ। শাম্মী অবশ্য বলেছেন, পঙ্কজের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

শাম্মীর বাবা আওয়ামী লীগের ডাকসাইটে নেতা। ১৯৯১ সালে ওই আসন থেকে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য হন তিনি। যাইহোক, পরবর্তী দুটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করে এবং ডিসেম্বর ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এটি পুনরুদ্ধার করে।

আসন পুনরুদ্ধারের নায়ক ছিলেন পঙ্কজ নাথ।২০১৮ সালে তিনি আবার মনোনয়ন পান। তবে শাম্মীও মনোনয়ন প্রার্থী ছিলেন।

দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে পঙ্কজ বলেন, এখন আমার বিরুদ্ধে সত্যকে মিথ্যা বানিয়ে যা ইচ্ছা নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) বলে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী (শাম্মী আহম্মেদ) আমার বিরুদ্ধে উল্টাপাল্টা, মিথ্যা কথা আপাকে (শেখ হাসিনা) বলেছে। আমার অভিভাবক, আমার নেত্রী এসব বিষয়ে দেখবেন স্নেহের চোখে।

শাম্মী এই অভিযোগকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাকে কেন পঙ্কজের অব্যাহতি বিষয়‌টিতে জড়ানো হচ্ছে?? প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যা বলার ক্ষমতা আমার নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমার বাবা হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। সেজন্য তিনবার ওই এলাকায় গিয়েছিলাম। তা ছাড়া পঙ্কজের সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। তাকে অব‌্যাহ‌তি দেয়াটা দলের সর্বোচ্চ মহলের সিদ্ধান্ত।

পঙ্কজের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের। তিনি বলেন, ‘মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ইউনিয়নের ভোটাররা বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে আসাদের ভোট দেবে না।তাই আমাকে সাইজ করতে কৌশলে সরিয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞজনরা আমাকে আওয়ামী লীগ থেকে সরানোর জন্য কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করেন। তারা সিনিয়র নেতা, তারা কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন বুঝতে পারছি না।

তবে এ ক্ষেত্রে জেলা আওয়ামী লীগ কার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে তা স্পষ্ট করেননি পঙ্কজ।

তার সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের টানাপড়েন চলছিল বেশ কয়েক বছর ধরে। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ আসনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে।

পঙ্কজের প্রতিপক্ষ ছিল বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক তালুদার মোহাম্মদ ইউনুসের অনুসারীরা। দুই পক্ষের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে প্রা/ণহানিও ঘটেছে।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া গত সোমবার পঙ্গজকে দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘোষণা দেন। একজন সংসদ সদস্যের দলীয় পদ হুট করে কেড়ে নেয়ার ঘটনা সচরাচর ঘটে না। তাই সেদিন বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় হয়। কিন্তু সেদিন মুখ খোলেননি পঙ্কজ।

অব্যাহতির চিঠি পাওয়ার পর পঙ্কজের সেদিন প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘দলের পাঠানো অব্যাহতির চিঠি পেয়েছি। তবে এর বেশি কিছু বলতে চাই না।

দুদিন পর দলীয় কমিটিতে নিজের লোক রাখার অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হ/ত্যার পর যে ব্যক্তি উল্লাস করেছিল তাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। আর জাতীয় পার্টিতে থাকা অবস্থায় যে ব্যক্তি আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্যাতন করেছে তাকে সভাপতি করা হয়েছে। এ অবস্থায় আমি কীভাবে থাকব?’

হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জে পঙ্কজ নাথের দাপটের কারণে জেলা আওয়ামী লীগের অনুসারীরা কোণঠাসা।

তবে তিনি এখন বলছেন, ‘সেখানে কোনো সাংগঠনিক ক্ষমতা আমার নেই। আওয়ামী লীগের বিরোধী লোকজন নিয়ে আওয়ামী লীগের ক‌মি‌টি ঘোষণা করা হয়। এমপি হওয়ার আগে আমি উপজেলা কমিটির সদস্য ছিলাম। এমপি হওয়ার পরে আমাকে উপদেষ্টা করে এক রকম কমিটি থেকে বাদই দিয়েছে।’

তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে উপদেষ্টা কমিটির কোনো বৈঠক হয়নি, এখানে সাংগঠনিক ক্ষমতা আমার নেই, গ্রুপিংয়ের সুযোগও নেই।

স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রার্থী থাকার অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেন পঙ্কজ।

হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ইউপি নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হলে পঙ্কজ তার অনুসারীদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল।

জবাবে পঙ্কজ বলেন, “হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক একত্রিত হয়ে কট্টর বিএনপির সদস্যদের মনোনয়ন দিয়েছেন। তা ছাড়া বিদ্রোহী প্রার্থী তো তারাই দাঁড় করিয়েছেন। আ‌মি কোনো প্রার্থী দাঁড় করাই‌নি। স্বতন্ত্র হিসেবে আওয়ামী লীগের যারা নির্বাচন করেছে তারা জয়ী হয়েছে। তৃণমূলে খোঁজ নিলেই সবকিছু টের পাবেন।’

তিনি বলেন, আমি আমার এলাকায় খু/নের রাজনীতিকে কখনোই প্রশ্রয় দেইনি। বরং আমার এসব বিষয়ে শক্ত অবস্থান থাকায় নিরীহ লোকজনকে হত্যা করেছে অশুভ শ‌ক্তি।’

তিনি মেহেন্দিগঞ্জ পুলিশ পরিদর্শক এবং পঙ্কজের মধ্যে সাম্প্রতিক ফোনালাপের ব্যাখ্যাও করেছেন যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল।

ওই ফোনালাপে পঙ্কজ মেহে‌ন্দীগঞ্জ পৌর মেয়র‌ কামাল উ‌দ্দিন খানকে কো/পানোর কথা বলেন। এ নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপ‌তি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ অনুসারীরা তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠ‌নিক সম্পাদক সাহাব আহম্মেদ পঙ্কজসহ দেশে থাকা হিন্দুদের নিকৃষ্ট বলে অ‌ভি‌হিত করেন।

পঙ্কজ বলেন, “মেহেদী নামের একজনকে মারধর করেছে মাদকাসক্ত রাতুল। পরে এলাকার লোকজন রাতুলকে মা/রধর করে। আমার নাম জড়িয়ে মিথ্যা অপপ্রচার করা হয়েছে। তখন আমি কাউকে ফোন করে বাড়াবাড়ি না করতে বলেছিলাম। তখন রাগের মাথায় বলেছি।

প্রসঙ্গত, তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য প্রদান করায় এমন পরিস্থিতির তৈরী হয়েছে বলেন জানান এই সাংসদ। তিনি আবারও বলেন যারা আমার বিরুদ্ধে এসব করছেন কেন করছেন তিনি জানেন না।

About Babu

Check Also

সংস্কারের নামে ভয়াবহ দুর্নীতি-লুটপাট

সংস্কার ও উন্নয়নের নামে কয়েকগুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে হরিলুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *