পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন স্থগিত করে সেটার তারিখ পিছিয়ে দিয়েছে। দেশটির সিনেট শুক্রবার একটি বিতর্কিত প্রস্তাব পাস করে। এর পর দেশটির আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আবারও সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার দ্রুত নিন্দার মুখে পড়া এই প্রস্তাবে ৮ ফেব্রুয়ারির ভোটকে কয়েক মাস পিছিয়ে দেওয়ার যুক্তি হিসেবে খারাপ আবহাওয়া, দুর্বল নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও কোভিড-১৯ রোগের প্রকোপের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্রস্তাব দ্রুত নিন্দার মুখে পড়ে, তবে এই প্রস্তাব বাধ্যতামূলক নয়। খবর দ্যা ডলের।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০০ জন সিনেট সদস্যের মধ্যে মাত্র ১৪ জন উপস্থিত ছিলেন। সিনেটের নিয়ম অনুযায়ী, কোরামের জন্য সিনেটের মোট সদস্যের এক-চতুর্থাংশ সদস্যের উপস্থিতি প্রয়োজন। উপস্থিত সদস্যদের অধিকাংশই প্রস্তাবকে সমর্থন করলেও প্রধান রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের কর্মীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বৃহস্পতিবার বলেছে যে তারা আশা করে পাকিস্তানের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং দেশটির আইন মেনে চলবে।
দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ২৪.১ কোটি মানুষের দেশে চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তবে নির্বাচনপূর্ব কারচুপির ব্যাপক অভিযোগের কারণে এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বিতর্কের মুখে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পাকিস্তান কীভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবে তার সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের কাজ নয়।’
মিলার বলেন, ‘বরং এটা স্পষ্ট করা যে, আমরা দেখতে চাই এই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালিত হচ্ছে, যেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও সমিতি এবং শেষ পর্যন্ত একটি খোলামেলা, নির্ভরযোগ্য, প্রাণবন্ত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অবকাশ রয়েছে।’
তিনি কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে সামরিক-সমর্থিত পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিপীড়নের অভিযোগ সম্পর্কে প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন। ইমরান খান জেল থেকে ‘দি ইকোনমিস্ট’-এ লেখেন— তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআইকে অন্যায়ভাবে আটকে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও লিখেছেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন হলেও তা হবে বিপর্যয় ও প্রহসন। কারণ পিটিআইকে প্রচারের প্রাথমিক অধিকার দেওয়া হচ্ছে না।’
ক্রিকেট হিরো থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়ে ওঠা ইমরান খানকে ২০২২ সালের এপ্রিলে বিরোধীদের নেতৃত্বে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল। স্বাধীন নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি পিটিআই-এর বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন এবং ক্রমবর্ধমান মিডিয়া সেন্সরশিপের উদ্ধৃতি দিয়ে আগামী মাসের ভোটের অখণ্ডতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে ক্রমশ প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনের (স্বাধীন) কো-চেয়ারপার্সন মুনিজাই জাহাঙ্গীর গত সপ্তাহে ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আসন্ন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু বা বিশ্বাসযোগ্য হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই।