দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি বর্তমান সময়ে সংসদে বিরোধী দল হিসেবে রয়েছে। জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রয়ানের পর জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে অনেকটা বিভাজন সৃষ্টি হয়। জাতীয় পার্টির বর্তমান প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছেন তার স্ত্রী রওশন এরশাদ। কিছুদিন আগে তিনি বিদেশ থেকে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরেছেন। তিনি দলকে সুসংগঠিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
রওশন এরশাদ বলেছেন, ”পল্লীবন্ধু এরশাদ নেই। তিনি থাকলে দলটা অন্যরকম হতো। তিনি নেই, তাই জাতীয় পার্টি আজ এলোমেলো হয়ে গেছে।”
শনিবার (২রা জুলাই) দুপুরে গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বৈঠকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন না।
রওশন বলেন, যাদের দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাদের ফিরিয়ে আনা উচিত। যারা চলে গেছে তাদেরও ফিরিয়ে আনতে হবে। নইলে আমরা অনেক পিছিয়ে থাকব। তিনি অভিযোগ করেন, জাতীয় পার্টিতে স্বেচ্ছাচারিতা চলছে।
বক্তব্যে রওশন এরশাদ ক্ষো”ভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘ ছয় মাস থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। দলের কেউ আমার খোঁজ নেয়নি। আমি সবাইকে খুঁজছি। তবে যারা দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন তারা নিয়মিত আমার খোজ রেখে গেছেন। তারা মসজিদ ও মাজারসহ বিভিন্ন উপাসনালয়ে নামাজ আদায় করে আমার জন্য প্রার্থনা করেছেন।
তিনি বলেন, অনেক ভালো নেতা দলের বাইরে, তাদের দলে আনা দরকার। নতুন প্রজন্মকে দলে আনতে হবে। কাজী জাফর, শাহ মোয়াজ্জেম, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ অনেক সিনিয়র নেতা দল ছেড়েছেন, তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। দলকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমান করতে হবে। তা না হলে আমরা রাজনীতিতে টিকতে পারব না।
বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, দলকে শক্তিশালী করতে যা যা করা দরকার তাই করবো। এরশাদ সাহেব মনপ্রাণ দিয়ে এই দল গঠন করেছেন। সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, “আমি যখন বিমানবন্দরে পৌঁছলাম সেদিন অনেক লোক আমাকে অভ্যর্থনা জানাতে দেখে আমি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিলাম।”
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, এরশাদ ওপারে ভালো আছেন। উনি জান্নাতবাসী হবেন। কারণ, তিনি ইসলামের খাদেম ছিলেন।
সভায় জাপার সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মিলন বলেন, দলীয় কর্মীরা আজ অসহায়, তাদের কেউ খোঁজ নেয় না। আপনাকে (রওশন এরশাদ) দলের দায়িত্ব নিতে হবে। দলের লাখো নেতাকর্মী আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন। রওশনের ছেলে রাহগীর আল মাহি (সাদ এরশাদ) ছাড়াও অন্যান্য নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।