সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের সুবাদে গত বছর তিনেক আগেই বাংলাদেশি এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে ভারতের তামিলনাড়ুর ছেলে প্রেমকান্তের। আর এভাবে দীর্ঘদিন প্রেমের পর হঠাৎই একদিন প্রেমিকাকে সরাসরি দেখতে মন চেয়ে বসে প্রেমকান্ত। আর এরই জের ধরে সম্প্রতি ভারত থেকে বাংলাদেশে চলে এসেছিলেন তিনি।
বাংলাদেশে আসার পর একবার বরিশালে ওই কলেজ ছাত্রী প্রেমিকারর সঙ্গে দেখা হয় তার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রেমকে ধরতে পারেননি প্রেমকান্ত। প্রেমিকারর সঙ্গে দেখা করতে পুরো এক সপ্তাহ বরিশাল শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে বেড়ান তিনি। আর এবর প্রেমকান্ত আবারও প্রমিকার সঙ্গে দেখা করতে বরগুনায় পৌঁছেছেন। শুক্রবার (৫ আগস্ট) বরগুনায় যান তিনি। বর্তমানে তিনি তালতলী উপজেলার জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে অবস্থান করছেন।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় এই তরুণ জানিয়েছেন, প্রেমিকা ও তার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা না করে তিনি দেশে ফিরবেন না। তিনি দাবি করেন, ২৪ জুলাই আমি শুধুমাত্র বান্ধবীর সাথে দেখা করতে বাংলাদেশে এসে ছিলাম। এরপর আমরা তিনবার দেখা করেছি। কিন্তু তারপর থেকে সে আমাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে। কিন্তু কেন জানি না। এটা আশ্চর্যজনক। তিন বছরের সম্পর্ক ছেলেখেলা নয়। তার কথা ভেবেই এ দেশে এসেছি। তাকে ছাড়া আমার ভারতে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। তার সাথে দেখা করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আমি তাকে বিয়ের জন্য জোর করছি না। আমাকে মারা করা হয়েছে, তবে এরপরও আমি পিছপা হব না।’
প্রেমকান্তের অভিযোগ, মেয়ের অন্য প্রেমিকের কাছেও তাকে মারধর খেতগে হয়েছে। টাকাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তবে ভারতীয় এই যুবক যাকে প্রেমিকা হিসেবে দাবি করছেন সেই তরুণী দাবি করেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় কতজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে, এভাবেই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠেছিল তার সাথে। এক পর্যায়ে আমি বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করি। এরপর তিনি বলেন, দেখা করতে বাংলাদেশে আসবেন। তাকে বারবার বারণ কটি। কিন্তু কোনোভাবেই মানতে রাজি নন। অবশেষে বরিশালে এসে ঝামেলা শুরু করে। কলেজের সামনে এসে খুঁজতে থাকে। এরপর বিভিন্ন মাধ্যমে বলা হয় তাকে লোকজন দিয়ে মারধর করেছি। তার সাথে প্রেমের ব্যাপারটা যেমন মিথ্যা, অন্য একজনের সাথে তাকে মারধর করাটাও মিথ্যা।’
তরুণী আরও দাবি করেছেন যে বিমানবন্দর পুলিশ তাকে ডেকেছিল। তিনি এবং তার বাবা-মাও সেখানে ছিলেন। পুলিশ প্রেমকান্তকে জিজ্ঞাসা করেছিল তার কোন অভিযোগ আছে কি না, তিনি বলেন, ‘না, কোন অভিযোগ নেই’। এরপর পুলিশ তাকে ঢাকায় পাঠায়। এ সময় থানায় অভিযোগ জানাতে বললে পুলিশ মেয়েটিকে সান্ত্বনা দেয় এবং প্রেমকান্তকে ভারতে পাঠানো হলে আর কোনো সমস্যা হবে না বলে জানায়। কিন্তু তিনি ঢাকায় না গিয়ে বরিশালে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। ওই তরুণী ও তার বাবা ভারতীয় যুবকের শাস্তি দাবি করেন। তালতলী থানার ওসি সাখাওয়াত তপু বলেন, প্রেমকান্তের সঙ্গে কথা হয়েছে তিনি তালতলী থেকে দেশে যাবেন।
এর আগে গত ২৪ জুলাই ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রেমকান্ত। ভেবেছিলেন প্রেমিকাকে নিয়েই নিজ দেশে ফিরে যাবেন তিনি। কিন্তু এরই মধ্যে ঘটে গেল এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। রীতিমতো প্রেমিকার ছেলে বন্ধুর হাতে মারও খেতে হয়েছে তাকে। তবে এরপরও প্রেমিকাকে ছেড়ে যেতে চান না তিনি।