সম্প্রতি রহিমা বেগম নামে এক নারী নিখোঁজ হয় বলে তার পরিবারের সদস্য থানায় অভিযোগ করেন। পরে তার সন্ধানের জন্য সংবাদ সন্মলেন করে তার মেয়ে আঁকতি জানায়। তবে সংবাদ সন্মলেন তিনি জমি সংকান্ত বিরোধের বিষয়টি জানান। কিন্তু প্রকৃত ঘটনায় ভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে। অবশেষে ওই না্রীকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ এবং ঘটনার সাথে পরিবারের লোকের সম্পৃক্তরা কথা প্রকাশ পেয়েছে।
খুলনার মহেশ্বর পাশা থেকে নিখোঁজের ২৮ দিন পর ফরিদপুর থেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় রহিমা বেগমকে। পুলিশ বলছে, রহিমা স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন। তবে একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মরিয়ম মান্নান নিজেই মাকে লুকিয়ে রাখার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য রহিমা ও তার মেয়েরা অপহরণের নাটক করেছে। রহিমা আত্মগোপনে যাওয়ার পর, মেয়েরা অজ্ঞাতপরিচয় যে কোনো নারীর লা/শকে তাদের মা বলে দাবি করার পরিকল্পনা করে।
এর আগে, গত শুক্রবার ময়মনসিংহে ১২ দিন আগে উদ্ধার করা একটি মরদেহকে মায়ের বলে দাবি করেন মরিয়মসহ তার তিন বোন। কিন্তু এখন তাদের মাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার ওসি আব্দুল ওহাব জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রাম থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়। তাকে খুলনায় পাঠানো হচ্ছে।
বেশ কয়েক বছর আগে খুলনায় রহিমা বেগমের বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকতেন কুদ্দুস মোল্লা নামে এক ব্যক্তি। তার বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালখালীর সৈয়দপুরে। ওই বাড়িতেই আত্মগোপনে ছিলেন রহিমা বেগম।
উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে রহিমা নিখোঁজ হন। ওই সময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওই বাড়িতে ছিলেন। রহিমা বাসা থেকে পানি আনতে নেমে বাসায় ফিরেনি। ওই রাতেই রহিমা বেগমের মেয়ে আদুরী বাদী হয়ে অপহরণ মামলা করেন। খোঁজ না পাওয়ায় পরদিন দৌলতপুর থানায় জিডি করেন রহিমার ছেলে মো. মিরাজ আল সাদী। রহিমাকে অপহরণ করা হয়েছে দাবি করে গত ১ সেপ্টেম্বর খুলনায় সংবাদ সম্মেলন করেন পরিবারের সদস্যরা। রহিমার সঙ্গে জমি নিয়ে স্থানীয়দের মামলা বিষয়টি জানানো হয়েছিল। রহিমার করা সেই অপহরণ মামলায় আসামিরা হলেন- প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিুকল ইসলাম পলাশ, মোহাম্মাদ জুয়েল ও হেলাল শরীফ।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর রহিমা অপহরণ মামলা পিবিআইতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর পিবিআই কাগজপত্র পায়। এরই মধ্যে তার মেয়েরা দাবি করেছে, ময়মনসিংহে ১২ দিন আগে উদ্ধার হওয়া এক নারীর লা/শ রহিমা বেগমের।এদিন রাত পৌনে ১২টার দিকে মরিয়ম মান্নান ফেসবুক এক পোস্টে মায়ের লাশ পাওয়ার কথা জানান। পরদিন সকালে নিখোঁজ রহিমার মেয়ে মরিয়ম মান্নান, মাহফুজা আক্তার ও আদুরী আক্তার ফুলপুর থানায় পৌঁছান। ঐ সময় পুলিশ অজ্ঞাত ঐ নারীর ছবিসহ আলামতগুলো মেয়েদের দেখান। মরিয়ম মান্নান ছবিসহ সালোয়ার-কামিজ দেখে দাবি করেন, এটি তার মা।
প্রসঙ্গত, তার আত্মগোপনে থাকার বিষয়টির সাথে পরিবারের সদস্যরা সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। তবে আত্মগোপন থাকা রহিমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সব তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।