প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) বাংলাদেশ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে বিদেশে পাচারের অভিযোগ ওঠে এবং এরপর তিনি কানাডায় চলে যাওয়ার কথা শোনা যায়। কিন্তু কিছুদিন আগে পিকে হালকা হালদারকে ভারত থেকে গ্রেপ্তার করে দেশটির আর্থিক দুর্নীতি তদন্ত সংস্থা। জানা গেছে, তিনি দেশের বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে দায়িত্বরত ছিলেন। আর সেই সুযোগে তিনি অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার করেন।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক এবং রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিকে হালদারকে ২৫ দিনের জন্য জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের আদালত, যিনি ৩,৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার (১৫ জুলাই) বিচারপতি জীবন কুমার সাধু সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)-এর ৩ নম্বর আদালতে পিকে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীর মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ১০ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
এদিন বেলা ১১টায় তাঁদের ব্যাঙ্কশালের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়। দুপুর ১২টার দিকে তাদের বিচারকের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। শুনানি শেষে আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য নতুন তারিখ ধার্য করেন এবং পিকে হালদারের মেডিকেল পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
আজ আদালতের এজলাস থেকে কোর্ট লকআপে নেওয়ার সময় সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে পিকে হালদার বলেন, আজ চার্জশিট পেয়েছি। এবার দেখেশুনে মুখ খুলব। তার আগে না।
এর আগে, ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) পিকে হালদার এবং তার পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে ১২ জুলাই আদালতে একটি চার্জশিট দাখিল করে।
উল্লেখ্য, সাড়ে তিন হাজার কোটির বেশি টাকা আত্মসাৎ করে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যান পিকে হালদার। ১৪ মে, ভারতের আর্থিক দুর্নীতি তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা থেকে পিকে হালদারকে গ্রেপ্তার করে। পিকে হালদারের পাঁচ সহযোগীকেও গ্রেফতার করেছে তারা। গ্রেফতারের আগে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পিকে হালদারের প্রাসাদসম বাড়ি সহ প্রচুর সম্পত্তি পাওয়া গেছে।
৭ জুন, ইডি আদালতকে জানায় যে তারা পশ্চিমবঙ্গ সহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে পিকে হালদার এবং তার সহযোগীদের ৮৮ টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুঁজে পেয়েছে। ইডি আদালতকে আরও জানিয়েছেন যে, পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের ৩০০ কোটি টাকার সম্পদ পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, পিকে হালদারের দুর্নীতির সাথে জড়িত সন্দেহভাজন ৮২ জনের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয় দুদক এবং সেই মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। তবে তিনি গ্রেফতারের পর ভারতে তার বিচারিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এদিকে সেখানকার বিচারের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর তাকে বাংলাদেশে হস্তান্তর করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ।