সম্প্রতি ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটের কারনে বিশ্ব ব্যাপি অর্থনৈতিক মন্দার সৃষ্টি হয়েছে। যার প্রভাব উন্নত দেশের মতো বিশেষ
করে উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত ওপর ব্যাপক পড়েছে। যার কারনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সংকটে পড়েছে। রিজার্ভ সংকট তৈরী হয়ে সে জন্য আবদানি নির্ভর দ্রব্য ক্রয় করতে সরকারের ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। এটির প্রভাব বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুৎ নিয়ে উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে মন্তব্য করে যা বললেন তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড.হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার দিনের বেলায় বিদ্যুৎ বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তৌফিক-ই-ইলাহী সাহেব যা বলেছেন তা তাঁর ব্যক্তিগত কথা এবং তিনিই তা ব্যাখ্যা করতে পারবেন, সরকারের এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেই।
সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী প্রয়োজনে দিনের বেলায় বিদ্যুৎ ব্যবহার বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী শনিবার খুলনায় বিএনপির জনসভা প্রসঙ্গে বলেন, ‘শনিবার বিএনপি খুলনায় নবনির্মিত রেলস্টেশন ভাঙচুর, দৌলতপুরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হা/মলা চালায়। খুলনায় বিএনপি নেতারা বলেছেন, বাস-লঞ্চ বন্ধ। বাস-লঞ্চ মালিকরা নিজেরাই ধর্মঘট ডেকেছে। এখানে সরকার বা সরকারি দলের কোনো হাত নেই।
২০১৩-১৪-১৫ সালে বিএনপি যেভাবে বাসে, লঞ্চে আ/গুন দিয়েছে, শ্রমিকদের জীবন্ত পু/ড়িয়ে দিয়েছে, দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আ/গুন দিয়ে মানুষ হ/ত্যা করেছে, তাতে স্বাভাবিকভাবেই বাস-লঞ্চের মালিক-শ্রমিকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে এবং সেসব কারণে তারা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ব/লেন তিনি।
এ সময় ড. হাসান তার ট্যাবে ২০১৩-১৪-১৫ সালের কিছু সংবাদের ফুটেজ সাংবাদিকদের দেখিয়ে বলেন, ‘বিএনপির আ/গুনে কীভাবে বাস, লঞ্চ ও শ্রমিক পুড়ে মা/রা গেছে দেখুন। বিএনপির অপরাজনীতির আ/গুনের কারনে তারা হরতাল ডেকেছে।
সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ১০টি আসনও পাবে না বলে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে বেগম খালেদা জিয়া একাধিকবার বলেছিলেন আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনও পাবে না। ভাগ্যের এমন নির্মম পরিহাস, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ২৯টি আসন পায় অর্থাৎ ৩০টিরও কম। পরবর্তীতে উপনির্বাচনের পর তাদের আসন সংখ্যা বেড়ে ছিল। আর আওয়ামী লীগ তিন-চতুর্থাংশ আসন পেয়ে সরকার গঠন করে।
আবার ২০১৮ সালে বিএনপি ডান-বাম, অতি-ডান ও অতি-বাম সঙ্গে নিয়ে, কামাল হোসেনকে ‘হায়ার’ করে মাত্র পাঁচটি আসন পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেগম জিয়ার ৩০ আসনের ভাষণ যেভাবে তাদের যে অবস্থা হয়েছিল, আমার আশঙ্কা, ফখরুল সাহেবের ১০ আসনের ভাষণও তাদের একই অবস্থা হবে।
‘বিএনপির সমাবেশ দেখে আওয়ামী লীগ আতঙ্কিত’, বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা অনেক কথা বলছে এবং আমাদের কর্মীরা বলেছেন, তাদের সমাবেশ দেখে ভয় পাওয়া তো দূরের কথা, আমাদের কা/তুকুতু লেগেছে।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “আসলে বিএনপি আগে দুই হাজার লোকের সমাবেশ করত, এখন যখন ১০-১৫ হাজার লোক দেখেছে, বক্তৃতা দিতে গিয়ে কিছুটা খেই হারিয়েছে, এই হলো ঘটনা,” বলেন হাছান মাহমুদ।
বরং বিএনপি যাতে সমাবেশ করতে পারে সেজন্য আমরা সহযোগিতা করছি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, খুলনায় পুলিশ অনেক ধৈর্য্য দেখিয়েছে। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর নিক্ষেপ করলেও পুলিশ ও আমাদের নেতাকর্মীরা ধৈর্যের পরিচয় দেয়। নির্বিঘ্নে সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। আর বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন আমাদের সমাবেশে গ্রে/নেড হা/মলা, বো/মা হামলা হয়েছে। কিবরিয়া সাহেব, আহসান উল্লাহ মাস্টারের সমাবেশে হামলা চালিয়ে তাদের হ/ত্যা করা হয়।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের সরকারের বিরুদ্ধে কড়া বক্তব্য দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী হাসান বলেন, ‘আসলে জাতীয় পার্টিকে অনেকেই ‘বি টিম’ বলে, তাই তিনি কিছু কড়া বক্তব্য দিচ্ছেন দেখাচ্ছেন তারা বিরোধী দল , এটা ভালো। জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরে যে বিভ্রান্তি চলছে তা তারা নিরসনে সক্ষম হবেন বলে আশা করছি।
প্রসঙ্গত, দেশের জনগণের ওপর আস্থা হারিয়ে বিএনপি নির্বাচন আসতে চায় না কিন্তু তার দোষ চাপায় সরকার ওপর মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিএনপির আবারও ভরাডুবি হবে জনগণ তাদের চরিত্র সম্পর্কে জানে।