সম্প্রতি মেহেন্দিগঞ্জ মেয়রকে কোপানোর কথা বলে নতুন করে আবারও আলোচনায় আসেন বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে দলীয় আচারন ভঙ্গের বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তিনি দীর্ঘ দিন স্বেচ্ছাসেবক লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে ছিলেন পরে নীতি ভঙ্গের কারনসহ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠলে তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এবার দল থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়ে কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়া হলো দল থেকে।
বরিশাল জেলা শাখা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বরিশাল-৪ আসনের (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে অব্যাহতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এ বিষয়ে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাকে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
শনিবার আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত অব্যাহতিপত্রে পঙ্কজ দেবনাথকে দেওয়া হয়।
নানা অনিয়মের কারণে দলে কোণঠাসা সাংসদ পঙ্কজ দেবনাথ রোববার দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে অব্যাহতির চিঠি পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আমাকে বহিষ্কার করা হয়নি। আমাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমিও এই চিঠি পেয়েছি। কিন্তু কেন জানি না। জানার চেষ্টা করছি।
পঙ্কজ দেবনাথের চিঠিতে লেখা ছিল-
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদ সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অর্পিত ক্ষমতাবলে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আপনাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরিশাল জেলা শাখার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য পদসহ দলীয় অন্যান্য সকল পদ হতে অব্যাহতি প্রদান করেছে। উক্ত বিষয়ে আপনার লিখিত জবাব আগামী পনের (১৫) দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় দপ্তর বিভাগে জমা প্রদান করার জন্য সাংগঠনিক নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।’
এর আগে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথকে সংগঠনের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ১৭ বছর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
গত জুলাই মাসে বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথের সঙ্গে এক পুলিশ কর্মকর্তার কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র কামাল উদ্দিন খানকে কোপানোর নির্দেশনা দিতে শোনা যায়।
এছাড়াও সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি ও নৈরাজ্যের অভিযোগও আছে। ২০১৯ সালে তার বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য, দুর্নীতি, দখল সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজি, জমি দখল এবং অবৈধভাবে অর্থ সম্পদ অর্জনসহ ১৬টি অভিযোগ তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন সঞ্জয় চন্দ্র নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা।
এর এক বছর আগে ২০১৮ সালে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সাগরসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে তার বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের যোগসাজশের অভিযোগ তোলেন।
প্রসঙ্গত, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে বলে জানা যায়। যদিও এর আগেও তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্কে মুখে পড়েছিলেন।